আর উপদ্রব কমাতে দুই সিটি করপোরেশনের প্রতি মশক নিধন কার্যক্রম আরো জোরেশোরে চালানোর আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সচিবালয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এক সভায় তারা এ আহ্বান জানান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, এবার দুই হাজার ৬২৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এবং তারা রিলিজ পেয়েছেন। এই মুহূর্তে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৫৫১ জন।
গত ৫ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি ছিল ১৮ জন, ৬ জুলাই ১৬৪ জন, ৭ জুলাই ১২৪ জন, ৮ জুলাই ১৩০ জন এবং ৯ জুলাই দুপুর পর্যন্ত ১০৫ জন।
৬ জুলাইয়ের পর সংখ্যা কমলেও ডিজি বলেন, তার মানে এই না যে আগামী দিনগুলোতে কমবে। বৃষ্টি ও আবহাওয়ার তাপমাত্রার সঙ্গে ডেঙ্গুর একটা সম্পর্ক রয়েছে। বৃষ্টির পর তাপমাত্রা বেড়ে যায়। এ ধরনের পরিবেশ ডেঙ্গু মশার বংশ বৃদ্ধির খুব উপযোগী।
সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে জানিয়ে আবুল কালাম রোগীদের উদ্দেশ্যে বলেন, জ্বর হলে অনেক সময় সাধারণ জ্বর মনে করি। ডেঙ্গু জ্বরও রোগীর কাছে সাধারণ জ্বর মনে হবে। যে কোনে জ্বর তারা যেন সাধারণ জ্বর মনে না করে, অবহেলা না করে। তারা যেন চিকিৎসকের পরামর্শ নেন এবং পরীক্ষা করেন। যদি ডেঙ্গু পজেটিভ হয় তাহলে ডেঙ্গুর চিকিৎসা করতে হবে।
চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে ডিজি বলেন, বাংলাদেশে যারা ডেঙ্গু জ্বরের গাইডলাইন তৈরি করেছে, এটি বিশ্বের অন্যতম গাইডলাইন। যারা গাইডলাইন প্রণয়ন করেছেন তাদের নিয়ে পর্যালোচনা সভা করেছি। তারা পরামর্শ দিয়েছেন, যে সবে চিকিৎসক বা হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হবে, আমাদের গাইডলাইন যেন তারা স্ট্রিকলি ফলো করে। অনেকে দেখা যায় যে অধিকতর সতর্কতার জন্য অন্য রকম চিকিৎসা দেয়, সেটা কিন্তু রোগীর জন্য খারাপ হতে পারে।
‘রোগীর জন্য পরামর্শ হলো, জ্বর হলে অবহেলা করবেন না; সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। চিকিৎসক ও হাসপাতালের জন্য পরামর্শ হলো, আমাদের যে গাইডলাইন তা অবশ্যই যেন ফলো করে। ’
এবার রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণ নিয়ে মহাপরিচালক বলেন, গতবছর যে তথ্য পেয়েছিলাম এবার তারচেয়ে বেশি পাচ্ছি। ৪৭টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল থেকে তথ্য নিচ্ছি। আগে শুধু কন্ট্রোলরুম তথ্য নিত, এখন কন্ট্রোলরুম ও পরিচালক (ডিরেক্টর, ডিজিস কন্ট্রোল) তথ্য নেয়। কাজেই এবার সব খবর পাচ্ছি।
জোরেশোরে কার্যক্রম চান মন্ত্রী
বর্ষা মৌসুমে মশার উপদ্রব বেড়ে গেছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় ডেঙ্গুজনিত কারণে দু’একটি মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ ও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসক-নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা চিকিৎসা ভালো করে দিতে পারেন। জনগণকেও সচেতন করছি যাতে জনগণ মশার কামড় পরিহার করতে পারে এবং আশপাশের ডোবা-নালা পরিষ্কার রাখে, স্প্রে করে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এবছর ডেঙ্গু অনেক বেশি। রোগীর সংখ্যাও অনেক বেশি। আমাদের চেষ্টা থাকবে যাতে হাসপাতালে কোনো রোগীর মৃত্যু না ঘটে, অবহেলার কোনো কারণ নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বৃষ্টি হচ্ছে, মশাও বেড়ে যাচ্ছে, ডেঙ্গুর হারও বেড়ে যাচ্ছে। প্রত্যেক হাসপাতালেই কমবেশি রোগী পাচ্ছি।
দুই সিটির মশা নিধন কার্যক্রম নিয়ে মন্ত্রী বলেন, মশার উৎপত্তিস্থল যদি ধ্বংস করা হতো, মশার সংখ্যা কমে যেত। তাহলে মশা বাড়ার কথা না, কমার কথা। আমি মনে করি আরো জোরেশোরে কাজ করা প্রয়োজন যাতে ডেঙ্গু মশার সংখ্যা কমে যায় এবং ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যাও কমে যায়।
সভায় মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের সচিব ওকর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০১৯
এমআইএইচ/এএ