এ বিষয়ে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন টেন্ডারে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, টেন্ডারে কোয়ালিফিকেশন ক্রাইটেরিয়ায় যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছে তা একটি নির্দিষ্ট কোম্পানিকে কেন্দ্র করে দেওয়া।
তিনি বলেন, টেন্ডারে পুরোনো প্রযুক্তি আহ্বান করা হয়েছে। অথচ অটোমেশনের ক্ষেত্রে ক্লাউড বেইজড সেন্ট্রাল অ্যাপসের মতো নতুন প্রযুক্তি চলে এসেছে। এই প্রযুক্তিতে অটোমেশন অনেক বেশি সুবিধাজনক এবং ভোটার আইডি নম্বর অথবা পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে যাচাই করা সম্ভব। উন্নত বিশ্বে এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। যা ব্যবহার করার মতো অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও কারিগরি জনবল দেশের রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে দু’টি কোম্পানিকে কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের মাধ্যমে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তারা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অর্থোপেডিক রিহ্যাবিলিটেশন (নিটোর বা পঙ্গু হাসপাতাল নামে বহুল পরিচিত), ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেজ অ্যান্ড ইউরোলজি ও সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে অটোমেশনের কাজ আংশিক করেছে, পুরোপুরি করেনি। যে কারণে এখনো এসব হাসপাতালে প্রেসক্রিপশন ও বিলিং সিস্টেম আগের মতোই হাতে লেখা পদ্ধতিতে রয়ে গেছে।
এছাড়া কার্যাদেশে মেড প্যাক ব্র্যান্ডের প্যাকস সফটওয়্যার ব্যবহারের নির্দেশ থাকলেও মেডিসিন্যাপস ব্র্যান্ড দেওয়া আছে। সরবরাহকৃত যন্ত্রাংশও নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এছাড়া ন্যশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও এই কোম্পানি কাজ পেয়েছে। কিন্তু কোনো অগ্রগতি নেই। বর্তমানে সেই দুই কোম্পানির কথা মাথায় রেখেই তারা যেন আবার সহজে টেন্ডার নিতে পারে সে ব্যবস্থা করছে অধিদপ্তর। যেখানে তারা আগের টেন্ডারের কাজগুলো সম্পন্নই করেনি।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, কাজটা অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগের। তারাই বিস্তারিত বলতে পারবে। আমি নির্দেশনা দিয়ে রেখেছি, যেন দুর্নীতি ছাড়াই কাজগুলো সম্পন্ন হয়।
অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগের পরিচালক সমীর কান্তি সরকারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তার কাছে এ রকম কোনো অভিযোগ নেই বলে দাবি করেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, টেন্ডারবাজি বন্ধ করার জন্য সরকার এখন কেন্দ্রীয়ভাবে টেন্ডার অনুমোদন করে। একটা টেন্ডার আমরা সরকারের সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটে (সিপিটিইউ) জমা দেই। সেখান থেকে যাচাই-বাছাই করে তাদের অনলাইনে টেন্ডারটি প্রকাশ করা হয়। সমস্যা থাকলে তারাই ব্যবস্থা নেয়। অনেক সময় দরপত্র আহ্বান করাই হয় না। এই টেন্ডারের (যেটা সমালোচিত হচ্ছে) বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিল না, কিছু বক্তব্য ছিল। তাও ঠিক হয়ে গেছে বলেই টেন্ডার প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া আমাদের কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ নেই। থাকলে ব্যবস্থা নিতাম।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৯
এমএএম/এমকেআর/এইচএ/