শয্যা সংখ্যার তুলনায় রোগীর সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত বেশি হওয়ায় মা-বাবা ও স্বজনেরা তাদের আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে হাসপাতালের বারান্দায় মেঝেতে বসে বা দাঁড়িয়ে চিকিৎসা করাতে বাধ্য হচ্ছেন। লোকবল কম থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশু রোগীদের চিকিৎসা দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন।
প্রায় দু’বছর আগে মাগুরা ১০০ বেডের সদর হাসপাতাল ২৫০ শয্যায় উন্নিত হয়েছে। কিন্তু লোকবল নিয়োগ না হওয়ায় ১০০ শয্যার আলোকে শিশু ওয়ার্ডে বেডের সংখ্যা রয়েছে মাত্র ১০টি। যেখানে সব সময় ৭০ থেকে ৮০ জন শিশু রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে থাকে। কিন্তু আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে বিগত একমাস ধরে শিশুদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ার প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। ফলে প্রতিদিন গড়ে দেড়শ’ রোগী এ ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।
শহিদুর রহমান, সাবিনা ইয়াসমিনসহ একাধিক রোগীর অভিভাবক বাংলানউজকে বলেন, বেড না পেয়ে তারা তাদের অসুস্থ শিশু সন্তানদের কোলে নিয়ে হাসপাতালে বারান্দায় বা মেঝেতে বসে চিকিৎসা করাচ্ছেন। তারা বসার স্থান পেলেও অনেকে দাঁড়িয়ে তাদের অসুস্থ সন্তানদের চিকিৎসা করাতে বাধ্য হচ্ছেন।
শিশু ওয়ার্ডের ঘরে বারান্দায় স্থান না হওয়ায় অনেকে হাসপাতালে ভর্তি করে তাদের সন্তানকে নিয়ে শহরে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে অবস্থান করছেন। শুধু সময় মতো স্যালাইন, ইনজেকশন দেওয়া সময় হাসপাতালে নিয়ে আসছেন।
হাসপাতালে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, রোগীর সঙ্গে থাকা স্বজনদের চাপে হাসপাতালের গোটা শিশু ওয়ার্ডে চরম বিশৃঙ্খল পরিবেশ বিরাজ করছে। একজন শিশু রোগীর সঙ্গে কমপক্ষে চার-পাঁচজন করে আত্মীয়-স্বজন ওয়ার্ডের মধ্যে ভিড় করছেন।
এদিকে মাত্র একজন শিশু চিকিৎসক কম জনবল নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত রোগীর চিকিৎসা দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. জয়ন্ত কুণ্ডু বাংলানিউজকে বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তন হওয়ায় বর্তমানে শিশুরা শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। চলমান ১০ বেডের শিশু ওয়ার্ডে সব সময় গড়ে দেড়শ রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। কষ্ট হলেও তারা সাধ্যমতো শিশু রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. বিকাশ শিকদার বাংলানিউজকে বলেন, কম জনবল দিয়েই তারা অধিক রোগীর চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাচ্ছেন।
একজন রোগীর সঙ্গে একাধিক অভিভাবক বা দর্শনার্থী ওয়ার্ডে ভিড় করায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। মানুষ সচেতন না হলে তাদের পক্ষে সঠিকভাবে চিকিৎসাসেবা দেওয়া দুরূহ হয়ে পড়ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৯
এএটি