এত বেশি সংখ্যক চিকিৎসকের পদ শূন্য থাকায় বর্তমানে কর্মরতদের কাজের চাপ বেশি থাকায় স্বাস্থ্যসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। ফলে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
টাঙ্গাইল সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, জেলার ১২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, একটি যক্ষ্মা ক্লিনিক এবং স্কুল হেলথ ক্লিনিকে চিকিৎসকের অনুমোদিত পদ রয়েছে ২৯৯টি। এর মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ১৬৪ জন চিকিৎসক।
চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে ১৩৫টি। কর্মরত চিকিৎসকদের মধ্যে আবার ৪২ জন প্রেষণে অন্যত্র দায়িত্ব পালন করছেন। সেদিক থেকে দেখা যায়, মাঠ পর্যায়ে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ১২০ জন চিকিৎসক।
সূত্র আরও জানায়, কালিহাতী উপজেলায় ৩৩টি চিকিৎসকের পদ থাকলেও এখানে কর্মরত রয়েছেন ১২ জন চিকিৎসক। ২১ জন চিকিৎসকের পদই শূন্য। ঘাটাইল উপজেলায় ৩২টি পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ১৩ জন। এ উপজেলায় ১৯ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য। মধুপুর উপজেলায় ২৮টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ১১ জন চিকিৎসক। শূন্য রয়েছে ১৭টি। ভূঞাপুর উপুজেলায় ২৭ জন চিকিৎসকের মধ্যে ১৫ জন কর্মরত রয়েছেন। পদ শূন্য রয়েছে ১২ জনের। সখীপুরে ২৭টি পদের মধ্যে ১৭ জন চিকিৎসক কর্মরত থাকলেও পদ শূন্য রয়েছে ১০টি। নাগরপুরে ২১টি পদের মধ্যে নয় জন কর্মরত আছেন। ১২টি পদ শূন্য রয়েছে। দেলদুয়ারে ১৮টি পদ থাকলেও কর্মরত আছেন ১১ জন চিকিৎসক। এ উপজেলায় চিকিৎসকের সাতটি পদ শূন্য রয়েছে। ধনবাড়ীতে ২৬টি চিকিৎসকের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ১২ জন। এ উপজেলায় ১৪ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। মির্জাপুরে ২৩টি চিকিৎসকের পদ রয়েছে। এর মধ্যে ১৯ জন কর্মরত আছেন। শূন্য রয়েছে চারটি পদ। বাসাইল উপজেলায় ২৭টি চিকিৎসকের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন ২০ জন। সাতটি পদ শূন্য রয়েছে। সদর উপজেলায় অনুমোদিত ১৫টি পদ থাকলেও কর্মরত আছেন ১১ জন চিকিৎসক। চারটি পদ শূন্য রয়েছে। গোপালপুর উপজেলায় চিকিৎসকের ১৮টি পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ১১ জন। সাতজন চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে এ উপজেলায়। এছাড়া টাঙ্গাইল যক্ষা ক্লিনিকে একজন চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে।
সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এই উপজেলায় ১০ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়াও পাঁচজন প্রেষণে অন্যত্র কাজ করছেন। ফলে ২৭ জন চিকিৎসকের কাজ ১২ জন চিকিৎসক দিয়ে চালাতে হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে চার থেকে সাড়ে চারশ’ বহির্বিভাগের রোগী দেখা, ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ায় হিমশিম খেতে হয় কর্মরত চিকিৎসকদের। একই অবস্থা ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এখানে ২৭টি পদের মধ্যে ১২টি শূন্য ও ছয়জন প্রেষণে রয়েছেন। ফলে মাত্র ২৭ জন চিকিৎসকের কাজ নয়জন চিকিৎসক দিয়ে চালানো হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, চিকিৎসকের পদ শূন্য থাকায় মানুষকে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। শূন্য পদ পূরণ হলে মানুষকে আরও বেশি সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন মো. শরীফ হোসেন খান বাংলানিউজকে জানান, বিভিন্ন উপজেলায় চিকিৎসকের শূন্য পদের বিষয়ে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯
আরএ