এই পাঁচ দশক নানা চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যদিয়ে পার করলেও শিক্ষক সংকটের বিষয়টি দিন দিন প্রকট হচ্ছে। বর্তমানে এমন সময় পার হচ্ছে, নেফরোলজি বিষয়ের কোনো শিক্ষক না থাকায় ফরেনসিক বিষয়ের শিক্ষক দিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করাতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।
যদিও শিক্ষক সংকটের কারণে সেশনজটের কোনো বিষয় না থাকলেও বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান অর্জন করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৪ সালে কলেজটি স্থাপন করা হলেও এর কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৬৮ সাল থেকে। ওইসময় কলেজের পাঁচটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক পাঠদানের জন্য অভিজ্ঞ শিক্ষকদের প্রাধান্য দিয়ে অর্গানোগ্রাম তৈরি হয়। কিন্তু মেডিক্যাল কলেজ শুরু থেকেই শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনের রুটিনমাফিক ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয়নি।
শেবামেকের ১০টি বিভাগে সাতটি ক্যাটাগরিতে মোট ২০২ জন শিক্ষকের পদ রয়েছে। যে পদের অনুকূলে বর্তমানে হাসপাতালে ১০৪ জন শিক্ষক রয়েছেন। ফলে মঞ্জুরিকৃত পদের অনুকূলে ৪৮ দশমিক ৫১ ভাগ পদে শিক্ষক সংকট রয়েছে।
যার মধ্যে অধ্যাপকের ৩০টি পদের অনুকূলে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন সাতজন, সহযোগী অধ্যাপকের ৪৬ পদের অনুকূলে রয়েছেন ১৬ জন, সহকারী অধ্যাপকের ৬৯ পদের অনুকূলে রয়েছেন ৩৯ জন, প্রভাষক ৪৭ পদের অনুকূলে রয়েছেন ৩৪ জন, মেডিক্যাল অফিসার ছয় পদের অনুকূলে রয়েছেন চারজন। এমনকি ডেন্টাল অনুষদের ১০টি পদের মধ্যে মাত্র তিনটি পদের অনুকূলে শিক্ষক রয়েছে। তবে কিউরেটরের দু’টি ও প্যাথলজিস্টের দু’টি পদে সমান সংখ্যক জনবল রয়েছে।
জানা গেছে, শিক্ষক সংকটের এ জটিলতা দীর্ঘদিন ধরে চলে এলেও এরমধ্য দিয়েই শেবামেকের ৪৪তম ব্যাচ পর্যন্ত আট হাজার ৯৫৬ শিক্ষার্থী এমবিবিএস পাস করেছে। বর্তমানে ৫০তম ব্যাচ পর্যন্ত ১২শ’শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।
শিক্ষক সংকট নিয়ে বিভিন্ন সময় কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন-নিবেদন করে কোনো সাড়া পাননি। প্রফেসর পদ মর্যাদার শিক্ষক দ্বারা মেডিক্যাল কলেজের পাঠদান দেওয়ার নিয়ম থাকলেও সেখানে লেকচারার দিয়ে পাঠদানে বাধ্য হচ্ছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। এতে মানসম্পন্ন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ মাকসেমুল হক জানান, কলেজে বর্তমানে ফরেনসিক, কমিউনিটি মেডিসিন, ফিজিওলজি, অ্যানাটমি, নিউরোলজিতে শিক্ষক সংকট প্রকট। আর নেফরোলজিতে তো কোনো শিক্ষক-ই নেই।
তিনি বলেন, আমরা শিক্ষকের চাহিদার কথা জানিয়ে মন্ত্রণালয়ে কাগজপত্র পাঠিয়েছি। এখন শুধু যোগাযোগ করতে পারি। তবে মন্ত্রণালয়ই পারে আমাদের কলেজের জন্য শিক্ষক নিয়োগ দিতে।
সৈয়দ মাকসেমুল হক বলেন, শিক্ষক সংকটের কারণে নানা সংকট দেখা দিলেও পাঠাদানে যাতে বিঘ্নতা সৃষ্টি না হয় সে লক্ষ্যে আমরা অন্য শিক্ষকদের দিয়ে ক্লাস কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯
এমএস/আরবি/