ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ওজন কমাতে রাতের নয়, সকালের খাবার বেশি কার্যকর

স্বাস্থ্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৯
ওজন কমাতে রাতের নয়, সকালের খাবার বেশি কার্যকর ওজন কমাতে সকালের খাবার খান নিয়মিত। ছবি: সংগৃহীত

অনেকেই মনে করেন, ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সবসময়ের খাবারই সমান। নিয়মিত নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্যালোরি গ্রহণ করলে কখন খাচ্ছেন, তাতে কিছু যায় আসে না। কিন্তু, পুষ্টিবিজ্ঞানে এখন বেশ পরিবর্তন এসেছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে, দিনের শুরুতে খাবার খাওয়া ওজন কমানোর জন্য বেশি কার্যকর। দিনের শেষ বেলার খাবার বরং ওজন কমাতে বাধার কারণ হতে পারে। 

ভেবে দেখুন তো, রাতে টিভি পর্দায় চোখ রাখতে রাখতে কতবার বিস্কুট ও চিপসের মতো খাবার খেয়েছেন। হাতে কাজ না থাকলে সন্ধ্যায় বা রাতে বেশি চিনি ও চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়াও নতুন কিছু নয়।

পুষ্টিবিদদের মতে, দিনের শুরুতে যারা খাবার খান, বিকেল আসতে আসতে তারা তৃপ্ত ও কম ক্ষুধার্ত থাকেন। ফলে, অকারণে চিপস ও বিস্কুটের প্যাকেট বা আইসক্রিম খাওয়ার প্রবণতা কমে আসে।  

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মানব শরীরে দিনের প্রথমভাগে নেওয়া ক্যালোরি ও দিনের শেষভাগে নেওয়া ক্যালোরির বিপাক প্রক্রিয়া একেবারে আলাদা।  

আমাদের মস্তিষ্কে একধরনের ঘড়ি আছে, যাকে বলে ‘বায়োলজিক্যাল ক্লক’। ২৪ ঘণ্টার এই ঘড়ির প্রভাবক হিসেবে কাজ করে আলো, যা শরীরের বিভিন্ন অংশে সময়ের জানান দেয়। এই ঘড়ি আমাদের শরীরের ক্যালোরি, শর্করা ও চর্বি বিপাকে সাহায্য করে। মধ্যরাতে খাবার পরিপাকে বেশি সময় লাগে বলে সেসময় খাওয়ার অভ্যাস ওজন কমাতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

এ বিষয়ে ২০১৫ সালে একটি গবেষণা চালানো হয়। এতে অংশ নেন ৪২০ জন অতিরিক্ত ওজন ও মুটিয়ে যাওয়া রোগে (অবিজ) আক্রান্ত ব্যক্তি। তাদের দুই দলে ভাগ করা হয়। একদল দিনের শুরুতে খান, অন্যদল দিনের শেষে। প্রথমদল বিকেল ৩টার আগে দুপুরের খাবার খান, দ্বিতীয় দল দুপুরের খাবার খান বিকেল ৩টার পর। এছাড়া, দ্বিতীয় দল প্রথম দলের চেয়ে কম ক্যালোরি সম্পন্ন সকালের নাশতা করেছেন বা একেবারেই খাননি।  

ওজন কমাতে পরিমিত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।  ছবি: সংগৃহীত

২০ সপ্তাহের এই গবেষণা শেষে দেখা যায়, দ্বিতীয় দলের ব্যক্তিদের ওজন কমার পরিমাণ প্রথম দলের চেয়ে কম। প্রথম ও দ্বিতীয় দলের ব্যক্তিদের ওজন কমেছে গড়ে যথাক্রমে ২২ ও ১৭ পাউন্ড। এছাড়া, দ্বিতীয় দলের ওজন কমার গতিও ছিল ধীর। যদিও দুই দলই প্রতিদিন প্রায় ১৪শ’ ক্যালোরির খাবার এবং সমান পরিমাণ আমিষ, চর্বি ও শর্করা গ্রহণ করেছিল।  

গবেষণায় দেখা যায়, ক্যালোরির শোষণ, বিপাক ও হজম প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে আমাদের শরীরের বায়োলজিক্যাল ক্লক। সকাল ৮টার তুলনায় রাত ৮টায় এর গতি কম থাকে।  

তাই ওজন কমাতে হলে দিনের শুরুতে বেশি ক্যালোরি নেওয়ার অভ্যাস করা উচিত। সকালের নাশতা বাদ দেওয়া মোটেও উচিত নয়। রাতে যে পরিমাণ খাবার খান, সে পরিমাণ খাবার দুপুরে খাওয়া উচিত। তারপর, রাতের খাবারে যে পরিমাণ খাবার খেতেন, তার অর্ধেক খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। সেই সঙ্গে, রাতে শর্করা খাওয়া বাদ দেন।  

যারা রাতের শিফটে কাজ করেন, তারাও এভাবে সুফল পেতে পারেন। যেহেতু তারা সকালে ঘুমান, দিনের ভারী খাবারটা তারা খেতে পারেন বিকেল ৩টা থেকে ৪টার দিকে। আর কাজের শেষে সন্ধ্যা ৭টার পরে করতে পারেন হালকা নাশতা।  

নিয়মিত এই অভ্যাস গড়ে তুলতে আপনার স্মার্টফোনে অ্যালার্ম সেট করে রাখা এবং অযথা খাওয়া থেকে দূরে থাকতে অন্য কাজে মনোযোগ দিতে পারেন।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৯
এফএম/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।