প্রান্তিক জনপদের দোরগোড়ায় মা ও শিশুসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে উপকৃত হচ্ছে চরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। সরকারি ছুটিরদিন ছাড়া সবসময়ই খোলা থাকছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাখরেরকান্দি পুনর্বাসনকেন্দ্রে অবস্থিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বেশ পরিচ্ছন্ন ও মনোরম পরিবেশের। চিকিৎসকদের জন্য আলাদা কক্ষ, রোগীদের জন্য ওয়েটিংরুম, ফার্মেসি, জরুরি বিভাগ, আইটি কক্ষ, রোগীদের কক্ষ সবকিছুই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রবেশের আগে চোখে পড়বে ফুলের বাগানসহ নানা ধরনের গাছপালা। রোগীদের বেশিরভাগই পুনর্বাসনকেন্দ্রসহ চরাঞ্চলে বসবাসকারী দরিদ্র জনগোষ্ঠী। আর সেবা নিতে আসা বেশিরভাগই হচ্ছেন নারী ও শিশু।
স্থানীয়রা জানান, ঘরের কাছে এমন একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকায় অনেক উপকার হচ্ছে এলাকার মানুষের। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের চিকিৎসাসহ জরুরি সেবাগুলো সহজেই এখান থেকে পাওয়া যায়। ওষুধ দেওয়া থেকে শুরু করে সব ধরনের সেবা মেলে বিনামূল্যে। ফলে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পদ্মাসেতু স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি।
চিকিৎসা নিতে আসা জুলেখা বেগম নামে এক গৃহিণী বলেন, ঠাণ্ডা-জ্বর হওয়ায় ডাক্তার দেখাতে এসেছি। এখানে চিকিৎসা ও ওষুধ ফ্রি পাওয়া যায়। বাড়ির কাছে এমন একটি চিকিৎসাকেন্দ্র থাকায় আমাদের আর দূরে যাওয়া লাগে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের শিবচরের বাখরেরকান্দি পদ্মাসেতু স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ২০১৭ সালের ১৬ এপ্রিল উদ্বোধন করেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বেসরকারি সংস্থা রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টার (রিক) পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পদ্মাসেতু প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সেবা নিশ্চিতের জন্য স্থাপিত হলেও আজ চরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের কাছে ‘ঘরের হাসপাতাল’-এ পরিণত হয়েছে এটি।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র সংশ্লিষ্টরা জানান, এখানে প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক পরামর্শ ও কার্যক্রম, টিকাদান কর্মসূচিসহ নানা ধরনের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। এছাড়া স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার ক্যাম্পেইন, মা ও শিশু স্বাস্থ্য বিষয়ক মাসিক আলোচনা সভা পরিচালিত হয়। সপ্তাহে একদিন চক্ষু চিকিৎসাসেবাও দেওয়া হয়।
গত তিন বছরে এ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ১৭ হাজার ১৬৯ জনকে সেবা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ৫ হাজার ৭৮৯ জন নারী ও ৬ হাজার ৩৫ জন শিশু রয়েছে।
পদ্মাসেতু স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সহকারী কমিউনিটি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র দাস বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত আমাদের চিকিৎসাসেবা চালু থাকে। প্রতিদিন ৪০ থেকে ৪৫ জন রোগী এখানে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এখন ডায়াবেটিস পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। আগামীতে প্যাথলজিক্যাল সেবাও থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০২০
একে