গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল সহজ ও স্বল্পমূল্যে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। সে খবর সবার জানা।
কিট উৎপাদনের সবশেষ পরিস্থিতি বিষয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তার সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো।
বাংলানিউজ: বর্তমানে করোনা ভাইরাস সনাক্তকরণ কিট উৎপাদনের কোন পর্যায়ে রয়েছে?
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী: গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত করোনা ভাইরাস পরীক্ষার কিট উৎপাদন একেবারে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এই কিট উৎপাদনে দেশি এবং বিদেশি কাঁচামাল প্রয়োজন হয়। আমাদের বিদেশের প্রায় সব সামগ্রী চলে এসেছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে সব কিছু ব্রেকডাউন করে দেওয়ার ফলে আমাদের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে দেশের কাঁচামাল সংগ্রহ করতে। তারপরেও আমার আশা রয়েছে আগামী এপ্রিল মাসের ১০ তারিখের মধ্যে করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণের এক হাজার কিট উৎপাদন করে পরীক্ষার জন্য সরকার এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (who) কাছে জমা দিতে পারবো। এরপর তারা এগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন।
বাংলানিউজ: করোনা ভাইরাস পরীক্ষার অন্য কিটের সঙ্গে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উৎপাদিত কিটের কি ধরনের পার্থক্য রয়েছে?
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী: করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণ কিট উৎপাদন খুব কঠিন কিছু নয়। আমাদের এই পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ এবং সুলভ মূল্যে পাওয়া যাবে। এই পদ্ধতির জন্য বিশেষ কোনো দামি ল্যাবরেটরির প্রয়োজন নেই। যে কোনো হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডাক্তারের চেম্বার এই পদ্ধতি ব্যবহার করে মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যেই করোনা ভাইরাস শনাক্ত করতে পারবে। আমাদের শনাক্তকরণ পদ্ধতি অত্যন্ত ভালো। ফলে ইংল্যান্ড ও সাউথ আফ্রিকার মতো দেশ আমাদের এই কিট নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
আমাদের সমস্যা হলো বেশি পরিমাণে এগুলো উৎপাদন করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের কোনো ধরনের আর্থিক সহযোগিতা করা হয়নি। সরকার যদি কোনো ব্যাংকের মাধ্যমেও আমাদের টাকা ঋণ দিতো তাহলে আমরা পরবর্তীকালে নিজেদের ফান্ড থেকেই সেই ঋণ শোধ করে দিতে পারতাম।
বাংলানিউজ: সরকারের পক্ষ থেকে কেউ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে?
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী: সরকারের লোকজন সাপ্তাহিক ছুটির দিন শনিবারেও আমাদের অনেক ফাইলপত্রের কাজ করে দিয়েছে। সন্ধ্যার পরেও আমাদের কাজ করে দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করেছে। এজন্য আমি সরকারকে অনেক ধন্যবাদ জানাই। তবে সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে কেউ এ বিষয়ে যোগাযোগ করেনি।
বাংলানিউজ: গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছে কিনা?
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী: সরকার না চাইলে তো সরকারের কাছে কোনো চিঠিই পৌঁছানো সম্ভব নয়। আবেদন করলেও একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কারো কাছেই কোনো আবেদন করে লাভ নেই। সরকার যদি নিজে থেকে উদ্যোগ না নেয় তাহলে চিঠি পাঠিয়ে কোনো লাভ হবে না।
বাংলানিউজ: গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে কী পরিমাণ কিট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী: আমরা এপ্রিল মাসের ১০ তারিখের মধ্যে সরকারের কাছে করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণের এক হাজার স্যাম্পল দেবো। সরকার যদি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আমাদের ১২ থেকে ১৩ তারিখের মধ্যে অনুমোদন দেয়, তাহলে আমরা এপ্রিল মাসের মধ্যেই এক লাখ কিট শুধু বাংলাদেশের জন্য উৎপাদন করে জমা দিতে পারবো। এরপর আমরা আরো দশ লাখ কিট বিদেশের জন্য উৎপাদন করবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২০
আরকেআর/এএ