ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

বাসায় থেকে যেভাবে সুস্থ হলেন ব্যারিস্টার আকবর আমীন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২০
বাসায় থেকে যেভাবে সুস্থ হলেন ব্যারিস্টার আকবর আমীন ব্যারিস্টার আকবর আমীন বাবুল।

ঢাকা: ‘মুক্তিযুদ্ধ করেছি। অল্প বয়সে পাকিস্তানি শাসক আইয়ুব খানের সময়ে জেলও খেটেছি। কিন্তু তখন এতো কষ্ট লাগেনি। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর বাসায় আইসোলেশনে থেকে এর চেয়ে অনেক বেশি কষ্ট পেয়েছি।’

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাসায় থেকে সুস্থ হওয়ার পর মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) বাংলানিউজের কাছে এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুক্তিযোদ্ধা ব্যারিস্টার আকবর আমীন বাবুল।

তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়েছি।

কিন্তু বাসায় আইসোলেশনে থাকাটা অনেক কষ্টের। কারণ স্ত্রী-সন্তান সবাই আছে কিন্তু কারো সঙ্গে মিশতে পারছি না। এ বিষয়টা অনেক কষ্টের। আইয়ুব খানের আমলে অল্প বয়সে জেল খেটেও এমন কষ্ট পাইনি। তবে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। ঘরে বসেই আইইডিসিআরের চিকিৎসকদের তদারকি ও সহযোগিতায় সুস্থ হয়েছি। বিশেষ করে আইইডিসিআরের চিকিৎসক ডা. নওরোজের কথা বলবো। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এছাড়া সাবেক ছাত্র ডা. মোস্তাক ভাইয়ের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ’

সুপ্রিম কোর্টের এ আইনজীবী বলেন, ‘যেহেতু এ রোগের কেনো ওষুধ নেই, তাই ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। অর্থাৎ যেসব খাবার খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে সেগুলে খেতে হবে। তাহলে আল্লাহর রহমতে সুস্থ হওয়া যাবে। ’

ব্যারিস্টার আকবর আমীন বাবুলের সর্বশেষ করোনা ভাইরাস পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল মঙ্গলবার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন।

ওই স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ! করোনা যোদ্ধা, সুপ্রীম কোর্টের বিজ্ঞ আইনজীবী, ব্যারিস্টার আকবর আমিন বাবুল করোনামুক্ত। গতরাতে (সোমবার) তিনি রিপোর্ট হাতে পেয়েছেন।  কিছুক্ষণ আগে বাবুল ভাই ফোন করে সুসংবাদটি জানালেন। ’

ব্যারিস্টার আকবর আমীন বাবুলের লন্ডন থেকে ফেরার ঘটনা সম্পর্কে রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘বাবুল ভাই ভাবি ও তার দুই বাচ্চাসহ লন্ডন থেকে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ফেরেন গত মাসের ২০ তারিখ অর্থাৎ ২০শে মার্চ।  ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে তাদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।  সেই মোতাবেক তারা সবাই তাদের গ্রিনরোডের বাসায় হোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। ’

‘কিন্তু বাসায় ফেরার পরে বাবুল ভাই, তার স্ত্রী, দুই সন্তান এবং তাদের একজন অফিস সহকারী অসুস্থ বোধ করতে থাকেন।  প্রত্যেকের জ্বর জ্বর ভাব ও শরীর ব্যথার মতো উপসর্গ ছিল।  বাবুল ভাইয়ের ধারণা, তিনি লন্ডন থেকেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।  ঢাকায় অবস্থানরত তাদের অফিস সহকারী তার মাধ্যমে আক্রান্ত হতে পারেন।  এ অবস্থায় তাদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিন শেষ হয় ২ এপ্রিল। ’

করোনা ভাইরাস শনাক্তের বিষয়ে রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘৪ এপ্রিল বাবুল ভাই সপরিবারে এবং তার অফিস সহকারী আইইডিসিআরে গিয়ে করোনা ভাইরাস টেস্ট করান।  এর মধ্যে বাবুল ভাই এবং অফিস সহকারীর করোনা ভাইরাস পজিটিভ আসে। তার স্ত্রী এবং দুই ছেলের রিপোর্ট আসে নেগেটিভ। ’

পরবর্তীকালে বাসায় আইসোলেশনে থাকার বিষয়ে রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘বাবুল ভাই এবং অফিস সহকারী দুজনই আইসোলেশনে চলে যান।  তিনি কোনো হাসপাতালে ভর্তি হননি কিন্তু আইইডিসিআরের চিকিৎসকরা তাকে এবং তার অফিস সহকারীকে নিয়মিত পরীক্ষা করেছেন বাসায় এসে।  উপসর্গ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে বাবুল ভাই বলেন যে, তার জ্বর এবং গায়ে প্রচণ্ড ব্যথা হতো।  তিনি চিত হয়ে শুতে পারতেন না।  বাম দিকে কাত হয়ে শুলে তার বেশ শ্বাসকষ্ট হতো।  তবে ডান দিকে কাত হয়ে শুলে তিনি অনেকটা ভাল বোধ করতেন। ’

চিকিৎসা সম্পর্কে ব্যারিস্টার কাজল বলেন, ‘জ্বর হলে ছয় ঘণ্টা পরপর তারা প্যারাসিটামল খেয়েছেন। এছাড়াও নিয়মিত গরম পানি, লেবু পানি, আদা পানি খেয়েছেন।  কিন্তু তারা প্রচলিত ধারার অন্য কোনো চিকিৎসা গ্রহণ করেননি।  পরবর্তীতে অফিস সহকারীর টেস্টে নেগেটিভ হয়েছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২০
ইএস/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।