সোমবার (১৩ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
সচিব বলেন, বড় ছেলে হাসপাতালে আমার স্ত্রীর সঙ্গে একটানা ৪ দিন ছিল।
‘পরে তৃতীয় বার টেস্টে আমার ছেলের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। তখন তাদের হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে তারা ১৩ দিন ছিল। আমার ছেলের বয়স ২৭ বছর, তাকে আল্লাহ রক্ষা করেছে। আমি যদি তার নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে বসে থাকতাম আর বলতাম যে, বাবা যেহেতু নেগেটিভ ঘরেই থাকো, তাহলে জানিনা কী হতো। এ জন্য টেস্ট নিয়ে আমাদের হতাশা রয়েছে। নেগেটিভ ফলস হতে পারে কিন্তু পজিটিভ মানে পজিটিভ। এর মধ্যে দুর্বৃত্তরা আবার কোনো টেস্ট না করেই বলছে নেগেটিভ। তাদের কোনো রেহাই নাই। নারায়াণগঞ্জেও যদি এমন কিছু হয়ে থাকে, তাহলে আমি বলে যাচ্ছি, সিভিল সার্জন ব্যবস্থা নেবেন। এইসব দুর্বৃত্তরা বিদেশেও লোক পাঠিয়ে দিচ্ছে মানুষকে ফলস করোনা সার্টিফিকেট দিয়ে। এয়ারপোর্টে নামার পর সেই সব দেশ আবারও বাংলাদেশের মানুষকে ফেরত পাঠাচ্ছে। এই রিজেন্টের মতো, জেকেজির মতো আরো অনেকেই আছে। আমরা এসব ব্যাপারে অনুসন্ধান করছি, কাউকেই ছাড়বো না। দেশ নিয়ে, দেশের মানুষ নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলছে তাদের ছাড় নেই। ’
স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে সচিব বলেন, আমার পরিবারে দুইজন ডাক্তার, কিন্তু স্ত্রীর মৃত্যুর সময় কাজে লাগেনি। আপনারা যথাযথভাবে বেতন পাচ্ছেন, বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন, এসবের জন্য অন্তত মিনিমাম নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। অন্যান্য সার্ভিস থেকে আপনাদের সার্ভিসের সুযোগ-সুবিধা অনেক বেশি। আমি যথাযথ দায়িত্ব পালন করা সবাইকে প্রমোশন দিতে চাই। কিন্তু করোনার বাইরেও যদি অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত রোগী আসেন আর আপনারা চিকিৎসা না করেন সেটি আমরা সহ্য করবো না।
চাকরি জীবনের শুরুর দিকের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, হারিকেন দিয়ে ইউএনওগিরি করসি। স্ত্রীকে ফোন করতে ১০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে কথা বলতে হতো। এখন তো সেই অসুবিধা নেই, ভিডিও কলের সুবিধাও আছে। ফলে আমাদের তো প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা আর বেতনের টাকা হালাল করতে হবে। আপনার এখানে সেবা পায়নি বলে রোগী যদি চলে যায়, এটা আমি ভালোভাবে নেব না। আপনাদের এখানে সার্ভিস তারা পাচ্ছে না বলে ঢাকায় ভিড় জমাচ্ছে, এটা আর হতে দেওয়া যাবে না।
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম সচিব উম্মে সালমা তানজিয়া, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ, খানপুর করোনা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. গৌতম রায়, আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সায়মা আফরোজ ইভা, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২০
এমআরপি/এইচজে