বুধবার (১৫ জুলাই) বাংলানিউজের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জানতে মোবাইলে ফোন করা হলেও ব্যস্ততার কথা জানিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো বক্তব্য বা মন্তব্য দিতে রাজি হননি শেবাচিম হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৩ মে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৫১ জন স্টাফ নার্স যোগদান করেন।
ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করা হলে মো. মহিউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, শুরুতে এরকম একটা কিছু হয়েছিল, তবে পরবর্তী সময়ে বিষয়টি থেকে আমরা সরে আসি। আর টাকাপয়সা ওইভাবে তোলা হয়নি। যেহেতু অতীতে (আগের নিয়োগগুলোতে) কিছু একটা হয়েছিল, আর আমাদের বেতন-বিল হওয়া অর্থাৎ কবে নাগাদ হবে তা নিয়ে একটু শঙ্কা ছিল,তাই আমরা নিজেরাই একটু হেল্প করতে চেয়েছিলাম।
কর্মস্থলে যোগদানের আগে বেতন-ভাতার কাগজ ঠিক করতে টাকার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি আগে জানতেন না জানিয়ে তিনি বলেন, মূল বিষয়টি হলো, করোনার মধ্যে কে কোথায় থাকে, সেই হিসেব করে কয়েকজনকে কাগজপত্রগুলো গুছিয়ে অফিসকে হস্তান্তরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। যাতে অফিস একটু তাড়াতাড়ি করে দেয়।
তিনি জানান, নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের আগে কিছু টাকাপয়সা খরচ হয়েছে, তবে ২১শ’ টাকার বিষয়টি সঠিক নয়। আমাদের কাজগুলো সরকারিভাবেই হওয়ার কথা, তারপরও কাজগুলো দ্রুত করতে চেয়েছিলাম আমরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত এ সিনিয়র স্টাফ নার্সদের মধ্যে অসুস্থ নন, এমন বেশিরভাগই করোনা ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করেছেন ও করছেন। চাকরির সুবাদে তারা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বরিশালে এসে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাসও শুরু করেছেন। কিন্তু প্রায় ২ মাস ধরে দায়িত্ব পালন করলেও ১৪ জুলাই অব্দি তাদের বেতন-ভাতা পাননি।
তারওপর বেতন-ভাতা দ্রুত হওয়ার আশ্বাসে কাগজপত্র গুছিয়ে দেওয়ার অজুহাতে অবৈধভাবে তাদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের পরিকল্পনা নিয়ে নামে একটি মহল। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। যদিও এ বিষয়ে হাসাপাতালের নার্সদের সংগঠনগুলোর নেতারা কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে হাসপাতাল প্রশাসন বলছে, এসব কাজ সরকারিভাবেই করা হয়, সে ক্ষেত্রে অর্থের কোনো প্রয়োজন হয় না।
এদিকে অবৈধভাবে চাঁদা তোলার বিষয়টি জানাজানি হলে বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত সংবাদে হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক ডিজিটাল সিল বানানোসহ বিভিন্ন কাজে ‘টুকটাক খরচ’ হয়, সেই সূত্রে তেমন উদ্যোগ নেওয়া হয় বলে বক্তব্য দেন। কিন্তু অবৈধভাবে অর্থ আদায়ে সম্মতি প্রদান করা এবং সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধিমালার পরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে এ বিষয়টি জানার পর আমলে নেয় নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর। সেই সূত্রে গত ১৩ জুলাই অধিদপ্তরের মহাপরিচালক একটি স্মারকে সেবা তত্ত্বাবধায়ক সেলিনা আক্তারকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে শেবাচিম হাসপাতাল পরিচালকের মাধ্যমে তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২০
এমএস/এইচজে