ঢাকা: করোনা ভাইরাসের প্রকোপ ধীরে ধীরে কমছে, তবে শনাক্তের হার এখনও বিপৎসীমার অনেক উপরে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন।
বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বর্তমানে করোনা ভাইরাস কোন পর্যায়ে রয়েছে জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে এ কথা বলেন।
ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে অফিস খুলে দেওয়াটা কোনো সমস্যা নয়। তবে যেসব প্রতিষ্ঠান খোলা হবে সেখানে তাপমাত্রা মাপা, সাবান দিয়ে হাত ধোয়াসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সব ব্যবস্থা রয়েছে কিনা খেয়াল রাখতে হবে। অসুস্থ হলে কোথায় আইসোলেশনে বা কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে তা ঠিক করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যায়ক্রমে অফিস-আদালত খুলতে হবে। অফিস-আদালত, কল কারখানা, হাট-বাজার, যানবাহন খুলে দিলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের যে ঝুঁকি তৈরি হবে, তা যতটা সম্ভব কমানোর ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় সংক্রমণ আরও বেড়ে যেতে পারে। ’
তিনি বলেন, ‘কোরবানির ঈদের পর সংক্রমণের হার কিছুটা বেড়েছিল। গত দুই সপ্তাহ করোনায় মৃতের সংখ্যাও ৪০ জনের ওপরে ছিল। এ সপ্তাহে মৃত্যু কিছুটা কম। একজন রোগী সংক্রমিত হওয়ার তিন সপ্তাহ পর মৃত্যু হয়। গত দুই সপ্তাহ থেকে শনাক্তের হার শতকরা ২০ এর নিচে দেখা যাচ্ছে। শনাক্তের হার আরও কমতে থাকলে তখন বলা যাবে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ কমছে। না হলে দেখা যাবে এখানেই স্থির হয়ে আছে। যেমনটা জুন-জুলাই মাসে ছিল। ’
আইইডিসিআরের সাবেক এ প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, ‘করোনা ভাইরাস এমন একটি রোগ, যেটা চেষ্টা করে কমাতে হবে। বর্তমানে নমুনা সংগ্রহ কম হচ্ছে। মানুষ করোনা পরীক্ষা করাতে আসছে না। তাই শনাক্ত কম হচ্ছে। ’
তিনি বলেন, ‘তবে আমাদের করোনা ভাইরাস এমন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে যেন শুকনো মৌসুমে আবার সংক্রমণ বেড়ে না যায়। এ বিষয়ে সচেতনতা আরও বাড়াতে হবে। রোগী শনাক্ত করে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দিতে হবে। রোগীর স্বজনদের কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে। জনগণকে সম্পৃক্ত করে তৃণমূল পর্যায়ে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা এবং দরিদ্রদের মাস্ক সরবরাহ করতে হবে। তাহলে নিশ্চয়ই আমরা সংক্রমণ কমাতে পারবো। ’
বর্তমানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিম্নমুখী কিনা জানতে চাইলে ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহ ধরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমছে। তবে শনাক্তের হার শতকরা পাঁচের নিচে আসলে তখন বলা যাবে ভালোর দিকে যাচ্ছি। কিন্তু গতকালও শনাক্তের হার শতকরা ১৬ ভাগ ছিল। তাই এখনো আমরা বিপৎসীমার অনেক উপরে রয়েছি। শনাক্তের হার পাঁচের নিচে আসলে বলা যাবে আমরা বিপৎসীমার নিচে আছি। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২০
আরকেআর/এফএম