ঢাকা: দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। এ অবস্থায় তাকে বিদেশে পাঠানোর প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ওয়াহিদার বিষয়ে খোঁজ নিতে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা জানান।
ডিজি বলেন, ওয়াহিদার মাথায় লোহার আঘাতের কারণে অপারেশন পরবর্তী ইনফেকশনের ঝুঁকি রয়েছে। সেই ঝুঁকি বিবেচনায় সতর্ক রয়েছেন চিকিৎসকরা। তার স্বাস্থ্যগত উন্নতি ঘটছে, তবে সতর্কতার সঙ্গে তাকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে।
ওয়াহিদাকে এ মুহূর্তে বিদেশ পাঠানোর কোনো প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিশ্চয়তা দিতে পারবো না যে পরবর্তীতে রোগীর কোনো সমস্যা বা জটিলতা হবে না। কিন্তু আমাদের কনসাল্ট সার্জনসহ বিশেষজ্ঞরা কথা বলেছেন, তাদের ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আপাতত রোগী স্টেবল। ওনারা নিয়ে যেতে চাইলে নিতে পারেন। আমাদের দিক থেকে এ মুহূর্তে রোগী সিফট করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।
ওয়াহিদার চিকিৎসায় মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের নিউরো ট্রমা বিভাগের প্রধান ও নিউরোসার্জন মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন বলেন, সফলভাবে ওয়াহিদার অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে। তবে সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে, সেজন্য নিয়োজিত বোর্ডের চিকিৎসকরা তাকে অবজারভেশনে রেখেছেন।
‘আমরা তাকে ৭২ ঘণ্টা অবজারভেশনের কথা বলেছি। এ ৭২ ঘণ্টা তাকে আইসিইউতে রেখে অবজারভেশনে রাখা হবে। পরে পরশু সকালে আমরা মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা বসে সিদ্ধান্ত নেবো তিনি আইসিইউতে আরও থাকবেন কিনা। এটা বলতে পারি যে, তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। ’
ওয়াহিদা খানম তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং পরিচিতদের চিনতে পারছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে ছয় সদস্যের চিকিৎসক দল প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় ইউএনও ওয়াহিদার মাথায় জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করে।
অস্ত্রোপচার শেষেই তাকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রেখেছেন চিকিৎসকরা। তাৎক্ষণিকভাবে তার সেরে ওঠার বিষয়ে আশাবাদী হলেও তিনি শঙ্কামুক্ত নন বলে জানানো হয়।
গত বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে ইউএনও ওয়াহিদার সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা ও তার বাবার ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ইউএনওর মাথায় গুরুতর আঘাত এবং তার বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়।
পরে ইউএনওকে প্রথমে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) ভর্তি করা হয়। এরপর তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারে করে তাকে ঢাকায় আনা হয়। তিনি বর্তমানে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২০
পিএম/আরবি