ঢাকা: দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থা এখন আগের চেয়ে আরও উন্নতি হয়েছে। অস্ত্রোপচারের পর ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ শেষে তাকে হাসপাতালের ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) থেকে এইচডিইউতে (হাই ডিফেন্ডেন্সি ইউনিট) স্থানান্তর করা হবে।
সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের নিউরো ট্রমা বিভাগের প্রধান ও ওয়াহিদার মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান ডা. মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন।
ইউএনও ওয়াহিদার শারীরিক অবস্থার অনেকটা উন্নতি হওয়ায় তাকে আইসিইউতে রাখার বিশেষ প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে ডা. মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন বলেন, আইসিইউ থেকে তাকে স্টেপ ডাউন করে এইচডিইউতে নিয়ে যাবো। সেখানেও তিনি নিবিড় পরিচর্যায় থাকবেন তবে, আইসিইউতে থাকার তার প্রয়োজন নেই। তার শারীরিক অবস্থার অনেকখানি উন্নতি হয়েছে। তবে ওয়াহিদার শরীরের ডান পাশের অংশ অবশ ছিল, সেটার অবস্থার এখনও কোন উন্নতি হয়নি। কবে নাগাদ হবে বা কতদিন লাগতে পারে সে বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারছি না। এর জন্য যেসব ফিজিওথেরাপি প্রয়োজন, সেটা আমরা শুরু করে দিয়েছি। এখন বাকিটা সময়ের ব্যাপার।
তিনি বলেন, ওয়াহিদা কথা বলতে পারছেন, তার স্মৃতিশক্তি ফিরে এসেছে। তিনি পরিবার ও সন্তানের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন এবং স্বামীর সঙ্গে কথা বলছেন। তার মানে আমরা বুঝতে পারি, জ্ঞানের দিক থেকে তিনি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছেন। যেহেতু উনার মাথায় অনেকগুলো আঘাত লেগেছে। তাই মাথায় হালকা ব্যথা আছে। বাকিগুলোর অনেক উন্নতি হয়েছে।
ওয়াহিদার ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতেই শেষ হয়েছে। তাই সোমবার সকালে মেডিক্যাল বোর্ডের সব সদস্য বসে সমন্বিত সিদ্ধান্তে উনাকে আমরা স্টেপ-ডাউন করে এইচডিইউতে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি বলেও জানান তিনি।
ব্রিফিংয়ে ওই হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক ডা. বদরুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে ছয় সদস্যের চিকিৎসক দল প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় ইউএনও ওয়াহিদার মাথায় জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেন। অস্ত্রোপচার শেষেই তাকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন চিকিৎসকরা। তাৎক্ষণিকভাবে তার সেরে ওঠার বিষয়ে আশাবাদী হলেও তিনি শঙ্কামুক্ত নন বলে জানানো হয়।
গত বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে ইউএনও ওয়াহিদার সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা ও তার বাবার ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ইউএনওর মাথায় গুরুতর আঘাত এবং তার বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে ইউএনওকে প্রথমে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) ভর্তি করা হয়। এরপর তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারে করে তাকে ঢাকায় আনা হয়। তিনি এখন রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বাংলাদেশ সময়: ১২১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২০/আপডেট: ১৩০০ ঘণ্টা
এসজেএ/এএটি