বরিশাল: সারাদেশের ন্যায় আগামী ৪ থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত পক্ষকালব্যাপী বরিশাল ও ঝালকাঠি জেলায় ‘এ প্লাস’ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হবে। বরিশাল জেলার ১০টি উপজেলার ৮৫টি ইউনিয়নের ৩ লাখ ৮ হাজার ৫০৩ জন জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
এর মধ্যে ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সের ২ লাখ ৭৫ হাজার ৪৯৮ জন শিশুকে লাল রংয়ের ২ লাখ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট ক্ষমতাসম্পন্ন ও ৬ থেকে ১১ মাস বয়সি ৩৩ হাজার ৫ জন শিশুকে এক লাখ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট ক্ষমতা সম্পন্ন একটি করে নীল রংয়ের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
বৃহস্পতিবার (০১ অক্টোবর) বরিশাল জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সাংবাদিকদের ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় সিভিল সার্জন ডা. মো. মনোয়ার হোসেন এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, ‘ইতোপূর্বে জাতীয় ভিটামিন ‘এ প্লাস’ ক্যাম্পেইন এক থেকে তিন দিনব্যাপী হতো। তবে এবছর মহামারি করোনা ভাইরাসের বিস্তাররোধে ১৪ দিনব্যাপী এ কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
জেলার ২৫৫টি ওয়ার্ডের ২ হাজার ৪০টি অস্থায়ী এবং প্রতি উপজেলায় একটি করে টিকাদান কেন্দ্রসহ মোট ২ হাজার ৫০টি টিকাদান কেন্দ্রে চার হাজার একশ জন স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে এ জাতীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রতিবারের ন্যায় এবারও প্রতি কেন্দ্রে দুইজন করে স্বেচ্ছাসেবক, প্রতি ওয়ার্ডে দু’জন করে মাঠকর্মী এবং একজন করে প্রথম সারির সুপারভাইজার দায়িত্বরত থাকবেন। ভিটামিন ‘এ প্লাস’ ক্যাম্পেইন প্রচারের জন্য স্ব-স্ব এলাকায় নিয়মিত মাইকিংসহ মসজিদ থেকে মাইকিং করে প্রচারণা চালানো হবে।
সংবাদ সম্মেলনে কোনো গুজব বা অসত্য তথ্য পেয়ে জনগকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সিভিল সার্জন বলেন, ‘করোনাকালীন সময় যেসব শিশুরা টিকা না নিতে আসবে তাদের স্বজনদের অবশ্যই মাস্ক পরে টিকাদান কেন্দ্রে আসতে হবে। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সাবান-পানি ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা হবে।
তবে এ বছর ভ্রাম্যমাণ কোন টিকাদান থাকবে না। তাছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে এক দিন করে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। যেহেতু পক্ষকালব্যাপী সেহেতু ‘এ ক্যাপসুল’ খাওয়ানো নিয়ে তাড়াহুড়ো করার কিছু নেই বলেও জানান সিভিল সার্জন।
অনুষ্ঠিত ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিক্যাল অফিসার ডা. নুহাইনুল ইসলাম, এন আই কনসালটেন্ট ইব্রাহীম খলিল প্রমুখ।
অপরদিকে ঝালকাঠি জেলায় ৯০ হাজার ৬১ শিশুকে আগামী ৪ অক্টোবর থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত পক্ষকালব্যাপী ভিটামিন ‘এ প্লাস’ খাওয়ানো হবে। এজন্য ৮২২ কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে।
ঝালকাঠি সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. আবুয়াল হাসান।
জাতীয় পুষ্টিসেবা ও জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যণ মন্ত্রণালয় ১৩ দিনব্যাপী ক্যাম্পেইনটি বাস্তবায়ন করবে বলে কর্মশালায় জানানো হয়।
সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ছয় মাস থেকে ১১ মাস বয়সি ১০ হাজার ১২৭ শিশুকে নীল রংয়ের ‘এ প্লাস’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। ১২ মাস থেকে ৫৯ মাস পর্যন্ত বয়সি ৭৯ হাজার ৯৩ শিশুকে লাল রংয়ের ভিটামিন ‘এ প্লাস’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। জেলার মোট ৮২২টি কেন্দ্রে এক হাজার এক হাজার দুইশ ৭৪ জন স্বেচ্ছাসেবক এ দায়িত্ব পালন করবেন।
কর্মশালায় রিসোর্স পারসন হিসেবে অংশ নেন জেলা তথ্য কর্মকর্তা রিয়াদুল ইসলাম, ডা. হাফিজুর রহমন, ডা. শাকিল খান, প্রেসক্লাবের সভাপতি চিত্তরঞ্জন দত্ত, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আক্কাস সিকদার, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা গৌতম কুমার দাস।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২০
এমএস/এএটি