সিলেট: সিলেটে শিক্ষার্থীদের মধ্যে করোনা টিকাদান কার্যক্রম আগামী সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে। তবে বিভাগের আওতাধীন জেলাগুলোতে শনিবার ও রোববার থেকে সুবিধামতো কার্যক্রম শুরু করা হতে পারে, এমন ধারণা দিয়েছিন সংশ্লিষ্টরা।
শিক্ষার্থীদের ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীরা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী এই টিকা নিতে পারবেন। প্রাথমিক অবস্থায় ২৫ হাজার ৩৯৪ জন স্কুল শিক্ষার্থী এই ভ্যাকসিনের আওতায় আসবে, বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, নগরের প্রতিদিন চারটি কেন্দ্রে বিভিন্ন স্কুলের মোট ৬ শতাধিক শিক্ষার্থীদের এ টিকা দেওয়া হবে। কেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে- সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, ব্লু-বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও পুলিশ লাইনস উচ্চ বিদ্যালয়।
সিলেট বিভাগীয় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর কবীর বাংলানিউজকে বলেন, বিভাগে সাড়ে ৩ লাখ শিক্ষার্থীর তালিকা পাঠানো হয়েছে। যাদের জন্ম নিবন্ধন ১৭ ডিজিটে নেই। তারাও বিশেষ বিবেচনায় টিকা নিতে পারবেন। তবে টিকার সনদ পেতে গেলে ১৭ ডিজিটের পরবর্তীতে নিববন্ধন হবে। পরবর্তীতে আপডেট করতে হবে।
এর আগে বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিকে সাড়ে ৬ লাখ শিক্ষার্থীদের তালিকা পাঠানো হয়। এর মধ্যে ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছেন।
এর আগে গত ১৪ অক্টোবর ঢাকা বিভাগের মানিকগঞ্জ জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে ১২০ স্কুল শিক্ষার্থীর মধ্যে ফাইজারের ভ্যাকসিন দেওয় হয়। এরই ধারাবাহিকতায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) গত ১৭ অক্টোবর মাধ্যমিকের স্কুল শিক্ষার্থীদের তথ্য চায়। এরই ধারাবাহিকতায় ১২-১৭ বছরের মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষার্থীদের সাড়ে ৩ লাখের তথ্য পাঠানো হয়। এর মধ্যে সিলেট জেলা থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার স্কুল শিক্ষার্থীর তথ্য পাঠানো হয়।
সিলেট জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, তথ্য পাঠালেও এসব শিক্ষার্থীকে তখন ভ্যাকসিনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। শিক্ষার্থীদের ফাইজারের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। ফাইজারের ভ্যাকসিন নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রায় রাখতে হয়। এজন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকতে হয়। কিন্তু সিলেটের স্কুলগুলোতে এই ব্যবস্থা না থাকায় ভ্যাকসিন দেওয়ার গতি পায়নি। তাছাড়া শিক্ষার্থীরা জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে ভ্যাকসিনের নিবন্ধন করতে গিয়েও সমস্যায় পড়ে। কেননা, অনেক শিক্ষার্থীর জন্মনিবন্ধন সনদই অনলাইনে ছিল না।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আগামী সোমবার সিলেট নগরের চারটি প্রতিষ্ঠানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া জন্মনিবন্ধন সনদের বাধ্যবাধকতাও এখন তুলে দেওয়া হয়েছে। এ চারটি স্কুলে অন্যান্য স্কুলের শিক্ষার্থীদেরও ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্টরা বলেন, একটি বুথে প্রত্যহ ৩০০ জন টিকা দিতে পারবে। এভাবে ৪টি কেন্দ্রের প্রতিটি বুথে ৩০০ জন করে টিকা দিতে পারবে।
সিলেটে সোমবার টিকা দেওয়া শুরু হলেও রোববার থেকে মৌলভীবাজারে, রোববার থেকে হবিগঞ্জে এবং সুবিধাজনকভাবে সুনামগঞ্জ শনিবারে শুরু হবে। চারটি স্কুলে প্রতিদিন ৬০০ করে ২ হাজার ৪০০ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। কেন্দ্রগুলোতে আমাদের লোকবল থাকবে। মহানগরীর ২৫ হাজার ৩৯৪ শিক্ষার্থীকে প্রথম ধাপে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২১
এনইউ/কেএআর