ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ফরিদপুরের চরাঞ্চলে বাড়ছে রোগের প্রকোপ 

হারুন-অর-রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২২
ফরিদপুরের চরাঞ্চলে বাড়ছে রোগের প্রকোপ  ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল

ফরিদপুর: গত কয়েকদিন ধরে ফরিদপুরে তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের জনজীবন। বাড়ছে শীতজনিত রোগের প্রকোপ।

সেইসঙ্গে শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে দেখা দিয়েছে কোল্ড ডায়রিয়া।

পদ্মা নদী অধ্যুষিত ফরিদপুরের চরাঞ্চলবাসী, নদী পারের বসতি, বিভিন্ন বেড়িবাঁধ ও উন্মুক্ত ফসলি মাঠের পাশে বসবাসকারীরা তীব্র শীতে বেশি কাবু হয়ে পড়েছেন। গত ক’দিনের পদ্মাপাড়ের তুষারাচ্ছান্ন বাতাস আর ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার মধ্যে হাড় কাঁপানো শীতে ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সব বয়সীর মানুষজন।  

জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার বিন্দু ডাঙ্গী গ্রামের লক্ষ্মী রাণী বাংলানিউজকে বলেন, তার স্বামী চিত্ত হালদার (৬০) পদ্মা নদীর একজন মৎস্যজীবী। গত তিনদিন ধরে তীব্র শীতের কারণে তিনি অসুস্থ হয়ে নদীতে যেতে পারেননি। তাই সংসারে অভাব অনটন দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ক’দিনের তীব্র শীতে জেলার ভাঙন কবলিত ও ছিন্নমূল পরিবারগুলো বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এসব পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে শীতজনিত রোগ লেগেই আছে। দিনের অধিকাংশ সময় রোদ না থাকায় তারা আরও কাবু হয়ে পড়ছে। এমনকি গৃহপালিত পশুর মধ্যেও দেখা দিয়েছে শীতজনিত রোগ।

পদ্মা নদীর অন্য পাড়ে চরভদ্রাসন উপজেলার চরহরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির বেপারী বলেন, তীব্র শীতে চরাঞ্চলে একচেটিয়া ভাইরাস জ্বর দেখা দিয়েছে এবং আমি নিজেও জ্বরাক্রান্ত হয়েছি।

তিনি আরও বলেন, এ বছর সরকারি ও আমার ব্যক্তিগত তহবিল মিলে সর্বমোট ১ হাজার ৩০০ কম্বল দুস্থদের মধ্যে বিতরণ করেছি। কিন্তু শীতের তীব্রতা এতো বেশি যে শীতবস্ত্র বরফগলা ঠাণ্ডা আবহাওয়া প্রতিরোধ করতে পারছেন না।  

ফরিদপুরের চরঝাউকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মৃধা বাংলানিউজকে জানান, গত ক’দিনের তীব্র শীতে চরাঞ্চলবাসী একচেটিয়াভাবে ভাইরাস জ্বরসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে আরও শীতবস্ত্র বিতরণ করা দরকার।

এদিকে, অন্য এক ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজাদ খান বলেন, ক’দিন ধরে এলাকায় যেভাবে ভাইরাস জ্বরের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে, তাতে সবার আরও সচেতন হতে হবে।


ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দীকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে অধিকাংশ রোগীই শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসছেন। বেশির ভাগ রোগীই চিকিৎসাপত্র নিয়ে বাড়িতে চিকিৎসাধীন। এছাড়া চরাঞ্চলের স্বাস্থ্য কর্মীদের ঘরে ঘরে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য জোর তাগিত দেওয়াসহ প্রতিটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে।

ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. সাইফুর রহমান বলেন, শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওমিক্রন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবও বেড়েছে। এ অবস্থায় সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।