ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

বৈশ্বিক উষ্ণতায় মানুষ খাটো হচ্ছে

জনি সাহা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১২
বৈশ্বিক উষ্ণতায় মানুষ খাটো হচ্ছে

ঢাকা : বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে মানুষ খাটো হয়ে জন্মাতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা আশংকা করছেন।

বিজ্ঞানীরা সর্তক করে দিয়ে তাদের মতবাদের প্রমাণ হিসেবে তারা বলছেন, প্রায় পাঁচ কোটি বছর আগে পৃথিবীর প্রথম ঘোড়াটি এই কারণে ছোট হয়েছিল (যেটা হযেছিল বিড়াল আকৃতির)।



ফ্লোরিডা এবং নেবরাসকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক বলছেন যে, বৈশ্বিক উষ্ণতা এবং স্তন্যপায়ীদের আকারের মধ্যে একটি সংযোগ রয়েছে। যার কারণে ৫ কোটি বছর আগে যখন পৃথিবী উষ্ণ হয়েছিল তখন ঘোড়া এমন ছোট হয়ে গিয়েছিল। এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা খুঁজে পাওয়া প্রায় ছয় কোটি বছর আগের ঘোড়ার জীবাশ্ম ব্যবহার করেন।

ফ্লোরিডা জাদুঘরের কিউরেটর ডা. জনাথন ব্লচ জানান, তাপমাত্রা বৃদ্ধি বা কমের সাথে সাথে আকারেরও পরিবর্তন ঘটবে। কেননা ঘোড়ার আকৃতি একটা সময় ছিল গৃহপালিত বিড়াল আকৃতির।

বিজ্ঞানিরা আরও বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি স্তন্যপায়ী প্রাণিদের ক্ষেত্রেও একই প্রভাব ফেলবে। এই প্রভাবের ফলে মানুষও দিনেদিনে খাটো হয়ে যেতে পারে।

ডা. ব্লচ ডেইলি মেইলে এক সাক্ষাৎকারে জানান, সৃষ্টির শুরুতে ঘোড়ার আকৃতি ছিল ছোট কুকুরের মতো। পৃথিবীর তাপমাত্রা যখন ঠাণ্ডা হতে শুরু করে তখন ঘোড়ার আকৃতির বিষ্ময়কর পরিবর্তন আসে। ঘোড়ার আকার তাই এখন এত বেড়েছে।

তিনি আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে যে সময় বিশ্ব উষ্ণ ছিল সেই সময়টাতে স্তন্যপায়ী প্রাণী ছিল এবং যাদের আকৃতিও ছিল ছোট। কিন্তু কি পরিমাণ তাপমাত্রার কারণে স্তন্যপায়ী প্রাণী আজকের এই আকার ধারণ করেছে তা ঠিক আমরা খুঁজে বের করতে পারিনি।

ঘোড়া পরিচিত ছিল সিফ্রুহিপ্পাস নামে। এদের আবিষ্কার করা হয় পেলিওসিনি-ইওসিনি সময়ে যখন পৃথিবির তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ পর্যায়ে। প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার বছর স্থায়ী ছিল এই তাপমাত্রা। ফলে ঐ সময়টাতে প্রচুর কার্বন মনোঅক্সাইড উৎপন্ন হতো যা তাপমাত্রাকে ক্রমাগত ১০ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হারে বাড়িয়ে দেয়।

প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার বছর আগের সিফ্রুহিপ্পাস (বিড়াল আকৃতির) ঘোড়ার যে জীবাশ্ব সংগ্রহ করা হয়েছিল তার ওজন ১২ পাউন্ড থেকে কমে নেমে আসে ৮ দশমিক ৫ পাউন্ড। এটিকে পরবর্তী ৪৫ হাজার বছর সংরক্ষণ করে রাখার ফলে এর ওজন বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ পাউন্ডে।

নেবরাসকা ইউনির্ভাসিটির ডা. রস সিকর্ড বলেন, এ পর্যন্ত পৃথিবিতে এটিই সবচেয়ে পরীক্ষামূলক গবেষণা। যা পৃথিবির উষ্ণতা পরিবর্তনের পরিচয় বহন করছে।

এই পরীক্ষার ফলে এখন একটি প্রশ্ন উঠে এসেছে, ভবিষ্যতে আরও কতগুলো প্রাণী এই বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে খাটো বা ছোট হয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা হয়তো স্তন্যপায়ী প্রাণিদের মধ্যে তৃতীয় যারা এই বৈশ্বিক উষ্ণতার শিকার হবো। এদের মধ্যে কেউ কেউ অনেক ছোট হবে আবার কেউ কেউ হবে স্বাভাবিক আকৃতির তুলনায় অর্ধেক।

বাংলাদেশ সময় : ১৩৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।