ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

হাসপাতালের ওয়ার্ড নয় যেন স্টোর রুম! 

হারুন-অর-রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২২ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২২
হাসপাতালের ওয়ার্ড নয় যেন স্টোর রুম! 

ফরিদপুর: ওয়ার্ডের এক পাশে রোগী ভরা, অন্য পাশে ময়লা-আবর্জনা ও পুরাতন আসবাবপত্রের স্তূপ। কয়েকজন রোগীর বেড ওই পুরাতন আসবাবপত্রের সঙ্গেই রাখা হয়েছে।

দেখে বোঝার উপায় নেই, এটি স্টোর রুম না-কি রোগীর বেড।  

এমনই চিত্র দেখা গেছে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে।  

অপরদিকে হাসপাতালের টয়লেটগুলো থেকে বের হচ্ছে দুর্গন্ধ। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে নানা অব্যবস্থাপনায় ভুগছে হাসপাতালটি। এতে অস্বস্তিতে ভুগছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনরা।

সরেজমিনে গিয়ে হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ময়লার স্তূপ করে রাখা হয়েছে হাসপাতালের পুরাতন ও ভাঙাচোরা বেড, টেবিল, ট্রলিসহ অনেক সরঞ্জাম। তার পাশেই বসানো হয়েছে রোগীদের বেড। রোগীরা নিরুপায় হয়ে ওইসব বেডেই জায়গা করে নিচ্ছে। বেড থেকে তাকালেই চোখে পড়ে দুর্গন্ধযুক্ত বাথরুম, নেই পরিষ্কারের কোনো বালাই।  

মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত লাকি বেগম নামে এক রোগী জানান, হাসপাতালটির ওয়াশরুমের অবস্থা একেবারেই খারাপ, সেখানে গেলেই বমি চলে আসে। এখানে রোগীদের বেড আর দেখেন ওইপাশে ময়লা আবর্জনা রাখা। কেউ ঠিকমতো পরিষ্কারও করতে আসে না। আমি গতকাল রাত থেকে জ্বর নিয়ে ভর্তি আছি, এখন পর্যন্ত কোনো ডাক্তার আসে নাই।  

সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের ফুকরা নামক গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা নিরঞ্জন অধিকারী নামে এক রোগীর স্বজন বলেন, হাসপাতাল থাকবে ঝকঝকা, এখানের পরিবেশ মোটেও ভালো না। এই পরিবেশে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়বে।

হাসান নামে এক রোগীর স্বজন জানান, এখানের লোকজন প্রত্যেকেই থাকে ধান্দায়। বাথরুমগুলোতে যাওয়ার মতো কোনো পরিবেশই নেই।

এ বিষয়ে হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক সিভিল সার্জন ডা. মো. সিদিকুর রহমান পবিত্র হজ পালনের জন্য ছুটিতে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

তবে ফরিদপুরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বদরুদ্দুজা টিটো বাংলানিউজকে বলেন, সিভিল সার্জন স্যার হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে রয়েছেন, তিনিই দেখভাল করেন। বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে আমি সরেজমিনে গিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি দেখবো।

প্রসঙ্গত, এর আগে ডাক্তার, নার্স, স্টাফ সংকট ও যন্ত্রপাতি নষ্টসহ নানা কারণে আলোচনায় আসে হাসপাতালটি। সম্প্রতি হাসপাতালের ডায়ারিয়া ওয়ার্ডের পাশে দুই মাস ধরে জমে থাকা মেডিক্যাল বর্জ্য থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বকেয়া বিল নিয়ে সিভিল সার্জন ও পৌর মেয়র অনড় অবস্থানে থাকায় আলোচনায় উঠে আসে বিষয়টি। পরে বিষয়টি পৌর মেয়র অমিতাভ বোস কোনো আলোচনা ছাড়াই পরিষ্কার করে নেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।