নড়াইল: নড়াইলে প্রতিদিন বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। তবে, জেলার তিনটি সরকারি হাসপাতালের একটিতেও ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড না থাকায় আতঙ্কে আছেন পাশের অন্য রোগীরা।
নড়াইল জেলায় মোট তিনটি সরকারি হাসপাতাল রয়েছে। সেগুরো হচ্ছে- নড়াইল সদর হাসপাতাল এবং লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এই তিনটি হাসপাতালেই মূলত ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন এসব হাসপাতালে চলতি বছরের জুন থেকে এ পর্যন্ত ৩৩২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক ছাত্রসহ দুইজন মারা গেছেন।
প্রথম রোগী ভর্তি হয় গত ৭ জুন নড়াইল সদর হাসপাতালে। এরপর জুলাই মাসে ৬ জন, আগস্টে ২৩ জন, সেপ্টেম্বরে ৬৬ জন, অক্টোবরে ১৫১ জন ভর্তি হন। আর চলতি নভেম্বর মাসে এ পর্যন্ত শুধু সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৬ জন। বর্তমানে ১৮ জন রোগী জেলার তিন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার তিন উপজেলার পৌর এলাকার বাসিন্দারা ডেঙ্গুতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়া ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রাম বা অন্য শহর থেকে আক্রান্ত হয়ে এ জেলার বাসিন্দা অনেকে এসব হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে নড়াইল সদর হাসপাতালে আলাদা কোনো ডেঙ্গু ওয়ার্ড নেই। নিচতলায় ও দোতলায় সাধারণ মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ডে অন্য রোগীদের পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগী রাখা হয়েছে। হাসপাতাল থেকে মশারি দেওয়া হলেও কেউ কেউ মশারি টাঙাননি। অন্য রোগীদের মধ্যে এনিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে চিকিৎিসা নিয়ে তারা সন্তুষ্ট।
সুমন মোল্লা নামে এক তরুণ ডেঙ্গু রোগী গত পাঁচদিন ধরে নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, চিকিৎসা সেবায় তিনি খুশি। শুধু স্যালাইন কেনা লাগছে। অন্য সব ওষুধ হাসপাতাল থেকেই দিয়েছে।
পৌর এলাকার একাধিক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলানিউজকে বলেন, ‘ঘরের দরজা-জানালা আটকিয়ে রেখেও মশার উপদ্রব থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। পৌর কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে উদাসীন। খাল, ডোবা, ড্রেন ও বাসার আশপাশে অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন। যত্রতত্র ময়লা-অবর্জনা। এতে মশা বেড়েছে। ’
নড়াইল পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা বাংলানিউজকে বলেন, পৌর এলাকায় প্রতিটি ড্রেনে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে মশা নিধনের কাজ চলছে। এছাড়া মশা নিধনে সম্ভাব্য সব জায়গায় ওষুধ ছিটানো হচ্ছে।
নড়াইল সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক প্রেমানন্দ মন্ডল বাংলানিউজকে বলেন, ১০০ শয্যার এ হাসপাতালে প্রতিদিন সাধারণ রোগীই ভর্তি থাকে প্রায় ২০০-২৫০ জন। তাদের বারান্দায় বা মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ফলে আলাদা করে ডেঙ্গু ওয়ার্ড করা সম্ভব হয়নি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জটিল ডেঙ্গু রোগীকেও ভালোভাবেই চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। সেসব রোগী ভালো হয়ে বাড়ি যাচ্ছেন। প্রয়োজনে প্লাটিলেট দেওয়ারও ব্যবস্থা আছে। ওষুধেরও কোনো স্বল্পতা নেই। ’
আর লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হাসপাতালে জায়গার স্বল্পতার কারণে আলাদা করে ডেঙ্গু ওয়ার্ড করা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২২
এমএমজেড