কলকাতা: ফের কলকাতার আদালতে তোলা হলো বাংলাদেশ থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পাচারে জড়িত প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারসহ ৬ অভিযুক্তকে।
শনিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) তাদের আদালতে আনা হলে আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বক্তব্য পেশ করেন।
পিকে হালদারকে ফের ১৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে তোলা হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতার নগর দায়রা আদালতের সিবিআই স্পেশাল কক্ষ-৩ এর বিচারক শুভেন্দু সাহা।
এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি শেষবার পিকে হালদারসহ ৬ অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হয়েছিল। এর ২১ দিনের মাথায় আজ ফের আদালতে তোলা হলো তাদের।
এদিন পিকে হালদারের ভাই অভিযুক্ত প্রানেশ হালদারের জামিনের আবেদন করেন ভারতের বিখ্যাত আইনজীবী মিলন মুখার্জী। যা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছিল।
মিলন মুখার্জি বলেন, প্রশান্ত (পিকে) এবং পৃথ্বীশ বাংলাদেশ অর্থপাচারকারী -২০১২ (পিএমএলএ) আইনে অভিযুক্ত হলেও প্রানেশের নাম সে দেশ নেই। এমনকি প্রানেশ বাংলাদেশিও নন। এছাড়া প্রশান্ত ও পৃথ্বীশ থেকে বাংলাদেশ, ভারত, এবং কানাডার পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। প্রানেশের থেকে তা পাওয়া যায়নি। অথচ প্রানেশকে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচারের অভিযোগে ভারতীয় অর্থপাচারকারী -২০০২ (পিএমএলএ) আইনে জেল হেফাজেত নেওয়া হয়েছে। তাই প্রানেশকে জামিন দেওয়া যেতেই পারে।
জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অরিজিত চক্রবর্তী বলেন,প্রশান্ত (পিকে) হালদারের পাচার করা অর্থে ভারতে সম্পত্তি গড়েছেন তার ছোট ভাই প্রানেশ কুমার হালদার। ইডির জেরায় তিনি সে কথা স্বীকার করেছেন। আর এটা প্রমাণিত। বাংলাদেশ থেকে আসা টাকা ব্যবহার করেছেন প্রানেশ। তার কাছ থেকেও টাকাও পাওয়া গেছে। ভারতীয় পিএমএলএ আইন অনুযায়ী, কোনো অবৈধ অর্থ সীমান্ত পার হলে এই আইনে পড়ে।
প্রায় এক ঘণ্টার মতো প্রশ্নোত্তর শেষে বিচারক রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে বলেন, আপনার আর কিছু বলার আছে?
আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী জানান, আমরা আবার হালদারের নামে বাড়তি নথি (সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট) দেব।
এ কথা শুনে বিচারক বলেন, এখনো তো ট্রায়াল শুরু হয়নি তাই দিতেই পারেন। আগামী শুনানির দিন ১৬ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১টায় রাখছি।
দুই পক্ষের আইনজীবী তাতে সম্মতি দেয়।
গ্রেফতারের পর শনিবার পর্যন্ত ২৮০ দিন ভারতের জেলে বন্দি হয়ে আছেন পিকে হালদার ও তার সহযোগীরা। গত ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর থেকে পি কেকে গ্রেফতার করে ইডি। পিকে হালদার ও ৫ সহযোগী আছেন কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে এবং নারী সহযোগী আমিনা সুলতানা আছেন কলকাতার আলিপুর সংশোধনাগারে।
বাংলাদেশের অর্থ লুট করে পালিয়ে ভারতে গিয়ে পিকে হালদার শিবশঙ্কর হালদার নামে দেশটির নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য থেকে ভারতীয় রেশন কার্ড, ভারতীয় ভোটার আইডি কার্ড, প্যান এবং আধার কার্ডও সংগ্রহ করেছিলেন পিকে। এ ছাড়া তার অন্য সহযোগীরাও জালিয়াতির মাধ্যমে এসব কার্ড সংগ্রহ করেন বলে জানিয়েছে ইডি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২৩
ভিএস/এসএএইচ