কলকাতা: বই নয়, কলকাতা বইমেলায় মাত্র ৫০ রুপিতেই মিলছে ‘বইমেলা’। শুনতে অবাক মনে হলেও আসলে ‘বইমেলা’ হচ্ছে একটি পেস্ট্রির নাম।
ক্রেতাদের নজর কাড়তে শহরের এক বিখ্যাত মিষ্টি প্রস্তুতকারক তার পেস্ট্রির নাম দিয়েছেন ‘বইমেলা-২০২৩’। শুধু নামই দেননি, প্রেস্ট্রির উপরে বইয়ের থ্রিডি প্রিন্টও দিয়েছেন। এক ঝলক দেখলে মনে হবে ছোট্ট একটা বই।
বইমেলায় আসা দর্শনার্থী, বইপ্রেমীরা সেই পেস্ট্রিও গিলছেন গোগ্রাসে।
মেলায় এখন নিয়মিতই শোনা যায়, দাদা, একটা ‘বইমেলা’ দিন তো! ভিড় ঠেলে ৫০ রুপির নোট বাড়িয়ে দেন ক্রেতা। একফালি কাগজের প্লেটে বিক্রেতাও বাড়িয়ে দেন ‘বইমেলা’!
‘বইমেলা’পেস্ট্রি ছাড়াও কলকাতার বইমেলায় প্রাঙ্গণে আছে একটুকরো ভূস্বর্গ। অর্থাৎ ‘কাশ্মীরি কেশর কাওয়া’।
কাশ্মীরি যুবক মনসুর আর বিলাল তাদের বিশালাকার ট্র্যাডিশনাল পাত্র থেকে বড় কাগজের কাপে ঢালছেন সেই অমৃত। তৃপ্তির চুমুক দিচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। এক কাপ কাওয়ার দাম ৪০ রুপি। লেবু চা, রং চা, দার্জিলিং টি ছেড়ে শহরবাসী এখন এই কাওয়ায় মজেছেন।
কারণ, কাওয়ার স্বাদ নেওয়ার সুযোগ সবসময় মিলবে না।
সে কথাই জানিয়ে চুমুক দিতে দিতে এক ক্রেতা বললেন, কাওয়া তো সবদিন মেলে না। কবে কাশ্মীর যাব, ঠিক নেই। তাই ৪০ রুপিতে ডাল লেকের স্বাদ নিচ্ছি।
অপর ক্রেতার হয়তো এই প্রথম কাশ্মীরের কাওয়ার স্বাদ নিলেন। তিনি বললেন, আসলে বইয়ের সঙ্গে আর চায়ের কম্বিনেশন চির রোমান্টিক। কিন্তু কাওয়ায় স্বাদও যে দারুণ, ধারণা ছিল না।
শ্রীনগরের বাসিন্দা মনসুর আর বিলাল ক্রেতার হাতে কাপ ধরানোর আগে বুঝিয়ে দিচ্ছেন, কাশ্মীরি কেশর কাওয়া কী। এই মৌসুমে কেন খাওয়া উচিত এই পানীয়?
বিলাল জানালেন কাওয়ার নানা উপকারিতা। তার মতে, শুধু স্বাদ নয়, চেহারায় জেল্লার আনার পাশপাশি সর্দি কমবে, গলা ধরা ছেড়ে যাবে, ঠাণ্ডা লাগবে না ইত্যাদি ইত্যাদি। এতে কেশর, মধুসহ ১০-১২ রকমের মশলা। উপরে যত্ন করে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ড্রাই ফ্রুটসের গুঁড়ো। সেই কাওয়া খেতে এসে বহু ক্রেতা তাদের স্টল থেকে কিনে নিচ্ছেন বেরি, আখরোট, পেস্তা, কেশর, কিসমিস। এমনকী মিলছে রেডিমেড কাশ্মীরি কেশর কাওয়ার প্যাকেট। বাসায় নিয়ে গরম পানি ঢেলে দিলেই হবে।
কলকাতা বইমেলায় বই এবং খাবারেরর স্টল দুটোই গুরুত্ব পায়। এসময় যেমন বিভিন্ন রাজ্য বা দেশের বই যেমন মেলে ঠিক তেমনই মেলে বিভিন্ন প্রান্তের খাবারের স্বাদ। থাই চিকেন রোস্ট থেকে অক্টোপাস, বাঙালির বিরিয়ানি, খিচুড়ি, লুচি আলুর দমসহ সুইস স্যান্ডউইচ, ম্যাক্সিকান অমলেট সব ধরনের খাবার।
খাবারের বিশাল আয়োজন থাকে মেলাজুড়ে। বইপ্রেমীরা বই দেখার ফাঁকে ফাঁকে খুঁজে নিচ্ছেন পছন্দের ফুড স্টল। প্লেট থেকে মুখে খাবার মুখে তোলার আগে অনেকেই বের করছেন স্মার্টফোন। সেল্ফিতে বন্দি করে নিচ্ছে সেসব খাওয়ারের স্মৃতি।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৩
ভিএস/এসএএইচ