কলকাতা: প্রতি বছর রমজান মাস শুরু হতেই কলকাতার নাখোদা মসজিদ সংলগ্ন জাকারিয়া স্ট্রিট এবং রবীন্দ্র সরণির চিত্রটা সম্পূর্ণ বদলে যায়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
এবারও ঈদে নতুন পোশাক কিনতে দুপুরের চড়া রোদ উপেক্ষা করে বাংলার দূরদূরান্তের বাসিন্দারা এখানে আসছেন। মূলত, বাংলার রীতি অনুয়ায়ী দেখা যায়, উৎসবের প্রাক লগ্নে মানুষের মধ্যে কেনাকাটার বাড়তি হিড়িক পড়ে।
তবে এ বছরে ক্রেতাদের চাহিদা বিগত বছরগুলোর চেয়ে কিছুটা আলাদা। গ্রীষ্মের তাপদাহের হাত থেকে রেহাই পেতে সুতির পোশাকই বাংলার ক্রেতাদের আকর্ষণ বেশি। এ বছর রমজান শুরু হতেই বৃষ্টির দেখা খুব একটা মেলেনি। তীব্র গরমের মধ্যেই রোজা পালন করছেন মুসল্লিরা। একে গরম তার ওপর মানুষের হাতে অর্থ কম থাকার কারণে ক্রেতাদের টানতে দোকানের রংবেরঙের সুতির পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসেছে জাকারিয়া স্ট্রিটের সব ধরনের ব্যবসায়ীরা।
জাকারিয়া স্ট্রিটে তিন পুরুষের পাঞ্জাবি ব্যবসা আবদুল ও মোবারক আলী পরিবারের। আদতে হাওড়ার বাসিন্দা হলেও জাকারিয়া স্ট্রিটে ৭৫ বছর ধরে ব্যবসা করছেন তারা। সুতির পাঞ্জাবি থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্টাইলে পাঞ্জাবি সাজানো রয়েছে তাদের দোকানে।
আবদুলের অভিমত, প্রতি বছর সুতির পাশাপাশি অন্যান্য ধরনের পাঞ্জাবি বিক্রি হয়ে থাকে। তবে এ বছর প্রচণ্ড গরমের কারণে ক্রেতারা সুতির পোশাক বেশি কিনছেন। আদি, কেমব্রিক, লকনৌ চিকন প্রভৃতি সুতির পাঞ্জাবি এখন বেশি কিনছেন ক্রেতারা।
একই সড়কের পাঞ্জাবির দোকানে মালিক ইয়াসিন বলেন, এ বছর ক্রেতাদের মধ্যে সুতির পাঞ্জাবি কেনার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে তাদের পছন্দ পুরনো স্টাইলের পাঞ্জাবি। এখন সেসব বেশি চলছে। দামও সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে। এসব পাঞ্জাবি ২শ’, ৪শ’ রুপি থেকে শুরু করে ২০০০ রুপির মধ্যে রয়েছে। বিগত বছরগুলোতে ক্রেতাদের মধ্যে সুতির পাঞ্জাবি কেনার প্রবণতা এতটা ছিল না। এ বছর সেই চিত্রটা পুরো উল্টো।
একইভাবে নারীদের পোশাকের মধ্যেও সুতির পোশাকের চাহিদা বেশি। বিশেষ করে বোরকা এবং থ্রিপিস। আমব্রেলা বোরকা, স্ট্রেট লাইন বোরকা প্রভৃতি পোশাক বিক্রি হচ্ছে বলে জানান এসএস শামীম স্টোরের এক কর্মী। একইভাবে দোকাগুলোয় ভালোই চাহিদা আছে সুতির থ্রি-পিস এবং শিশুদের ফ্রকের। রোরকা বিক্রি হচ্ছে ৭০০ রুপি থেকে শুরু হয়ে ১৫শ রুপির মধ্যে। সুতির থ্রিপিস ৪০০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০০ রুপি। এগুলো সবই প্রায় রেডিমেড। যেটুকু অলটার করার বিষয় থাকছে, তা পাশের দর্জিরা করে দিচ্ছে।
এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন সাধারণত প্রতি বছর ঈদের ৭ থেকে ১০ দিন আগে এই বাজার শুরু হয়। এখন তাদের আশা ঈদের আগের বাকি দুদিন বেচাবিক্রি ভালো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২৩
ভিএস/এমজেএফ