কলকাতা: বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে বাড়ছে সমুদ্রের জলস্তর। এরমধ্যে সব থেকে বেশি জলস্তর বাড়ছে সুন্দরবন এলাকায়।
সেই তথ্য থেকে দেখা গেছে, সব থেকে বেশি জোয়ারের জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে সুন্দরবন এলাকায়।
পরিবেশ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ভারতের পশ্চিম উপকূলে কোচি, মুম্বাই এলাকায় বছরে ১-২ মিলিমিটার করে পানির স্তর বাড়ছে। সেই জায়গায় পূর্ব উপকূলে বিশেষ করে সুন্দরবন এলাকায় প্রতিবছর ৩ - ৭ মিলিমিটার পর্যন্ত জলস্তর বাড়ছে। এর ফলে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় সমুদ্রের পানি সহজে স্থলভাগে ঢুকে পড়ছে।
জলস্তর বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে বৃষ্টিপাতও। ফলে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা আগের তুলনায় অনেকটাই বাড়ছে।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালে বিগত কয়েক দশকের রেকর্ড ভেঙে প্রায় ৫০০ মিলিমিটার বেশি বৃষ্টি হয়েছে সুন্দরবন এলাকায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জোয়ারের সময় প্রবল বৃষ্টি হলে সুন্দরবনের নদীগুলো পক্ষে সেই বিপুল পানি ধরে রাখার সম্ভব হচ্ছে না। আর তখনই বাঁধ ভাঙছে, কোথাও বাঁধ উপচে গ্রামের মধ্যে নদীর পানি ঢুকছে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় লবণাক্ত মৃত্তিকা গবেষণা সংস্থার পশ্চিমবঙ্গের প্রধান বিজ্ঞানী উত্তম কুমার মন্ডল বলেছেন, ইংল্যান্ডের লিভারপুলে পার্মানেন্ট সার্ভিস ফর মিল সি লেভেল নামে একটি সংস্থা সমুদ্রের জলস্তরের তথ্য যাচাই করে। সেই তথ্য অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, মুম্বাই কোচি, বিশাখাপত্তনমের থেকে অনেক বেশি পানির স্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায়।
উত্তম মণ্ডল আরও জানিয়েছেন, গবেষণায় দেখা গেছে প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে ২০৭০ সালের মধ্যে সুন্দরবনের ১৩০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়া আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি জানান, এই সমস্যা থেকে সুন্দরবনকে রক্ষা করতে বেশি করে ম্যানগ্রোভ রোপন করতে হবে। পাশাপাশি শক্তপোক্ত নদী বাঁধ তৈরি করতে হবে। এছাড়া গ্রামে নদীর পানি ঢুকলে সেই পানি দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থাও রাখতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গের পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের কথায়, একমাত্র ম্যানগ্রোভই পাড়ে সুন্দরবনকে রক্ষা করতে। তাই ম্যানগ্রোভ ধ্বংস না করে আরও বেশি করে ম্যানগ্রোভ বসাতে হবে। না হলে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা একটা সময় সত্যি হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৫ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০২৩
ভিএস/এসএএইচ