কলকাতা: প্রকৃতির ডাকে শৌচালয়ে গেল রাজু রায় নামে ১২ বছরের কিশোর। আর ফিরল লাশ হয়ে।
সোমবার(৫ জুন) সকালে ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার জেলার বনগাঁ থানার বকশিপল্লী এলাকায়।
সেখানে একটি এক শৌচালয়ের ভেতরে মজুদ ছিল বিপুল পরিমাণে বোমা। সকালে শৌচকর্ম সারতে রাজু ওই শৌচালয়ে গেলে হঠাৎই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়।
আশপাশের লোকজন দৌড়ে এসে ঘটনাস্থলে রক্তাক্ত অবস্থায় শৌচালয়ের ভেতর থেকে তাকে বের করে আনেন। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় ওই কিশোরের।
ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা কিশোরের বাবা প্রশান্ত রায়।
তিনি বলেন, ছেলে শৌচালয় ভেতরে ছিল আমি বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। প্রচণ্ড শব্দ শুনে ভেতরে গিয়ে দেখি ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তুলতেই বুঝতে পারলাম সে আর নেই। আমার যা হলো, কোনো পরিবারে যেন না হয়। কাকে দোষ দেব, কে আর শোনে আমাদের কথা।
কে বা কারা আর কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে শৌচালয়ে বোমা মজুদ রেখেছে - সে বিষয়ে কোনো তথ্য মেলেনি এখন পর্যন্ত।
স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই বনগাঁ এলাকায় হেরোইন, ব্রাউন সুগার জাতীয় মাদকের ব্যবসা রমরমিয়ে চলছে। যে কারণে এ এলাকায় যেন বাড়বাড়ন্ত আগের থেকেই। এখন আরও অনেক বেড়েছে। হয়ত এসব বিস্ফোরক তারাই মজুদ রেখেছে। পুলিশ প্রশাসন সবাই সব কিছু জানে, কিন্তু কোনো সুরাহা হচ্ছে না।
এছাড়া বাংলাদেশের জন্য বনগাঁ গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। বেনাপোল -পেট্রোপোল হয়ে বহু বাংলাদেশি কলকাতায় আসার জন্য বনগাঁ থেকে ট্রেন ধরেন। এই বনগাঁর ঠাকুরনগর অঞ্চল দিয়ে যাতায়াতের সময় অনেক বাংলাদেশি এই শৌচালয় ব্যবহার করেন। এছাড়া স্থানীয় মতুয়া সম্প্রদায়ের লোকজনও এটি ব্যবহার করেন।
এমন পরিস্থিতিতেও ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তঘেঁষা এলাকায় এরকম গাফিলতি, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা।
এদিকে বিস্ফোরণের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই দেখছে বনগাঁ থানার পুলিশ। তবে কোথা থেকে এই বোমা এলো, কারা মজুদ করল সে প্রশ্ন জানতে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে তারা।
এদিকে এ ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন তৃণমূল কাউন্সিলর পাপাই রাহা।
তিনি বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমার বলার কোনো ভাষা নেই। আমি পুলিশকে বলব বনগাঁয় যারা এই ধরনের অসামাজিক কাজকর্ম করে, যারা মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে তাদের গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৮ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০২৩
ভিএস/এসএএইচ