কলকাতা: এবার থেকে বাংলাদেশ-ভারত, বিশেষ করে বাংলাদেশ এবং উত্তরপূর্ব ভারতের পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল আরও সহজ হতে চলেছে। এমনকী দুই দেশের বাণিজ্যিক কার্গো যাতায়াতের খরচ প্রায় ২০-২৫ শতাংশ কমতে চলছে।
সোমবার(২৫ সেপ্টেম্বর) এই সমঝোতা চুক্তি সই হলো বাংলাদেশের সাইফ পাওয়ার টেক লিমিটেড এবং কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট (শ্যামাপ্রদাদ মুখার্জি বন্দর) এর মধ্যে। সমঝোতা স্মারক সই করেন বাংলাদেশর বিশিষ্ট শিল্পপতি তথা সাইফ পাওয়ার টেক লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মোহাম্মদ রুহুল আমিন ও কলকাতা বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যানের রাঠেন্দ্র রমন। সোমবার এই সমঝোতা চুক্তি সই হয় কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের অফিসে। এসময় উপস্থিত দুই দেশের ব্যসায়ীরা।
মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেছেন, এই চুক্তির মাধ্যেমে দুই দেশেই লাভবান হবে। শিলিগুড়ি করিডোর হয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরায় জলপথে দূরত্ব ১৬১৯ কিলোমিটার, কিন্তু, মংলা এবং চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ত্রিপুরার দূরত্ব কমে দাঁড়াচ্ছে ৫৭৫ কিলোমিটার। অন্যদিকে ভারতের মূল ভূখণ্ড (কলকাতা) থেকে শিলিগুড়ি করিডোর হয়ে ত্রিপুরা যেতে একটি পণ্যবাহী যেখানে ৬ থেকে ৭ দিন সময় লাগে। সেখানে মংলা এবং চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর দিয়ে একই গন্তব্যে পৌঁছতে সময় লাগবে সর্বোচ্চ ৩- ৪ দিন। স্বাভাবিক ভাবেই সময় এবং দূরত্ব কম হওয়ায় লাভবান হবে বাংলাদেশ এবং ভারত। বাড়বে ব্যবসায়িক কার্গো জাহাজের সংখ্যা। তার ফলে বর্তমানে কার্গো চলাচলে যা ব্যয় হয় তার খরচও অনেকটাই কমে যাবে।
রুহুল আমিন আরও বলেছেন, ব্যবসায়িক হিসেবে দুই দেশের প্রায় ১৩.২ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা হয়ে থাকে। আমাদের(বাংলাদেশ) সাথে ভারতের বাণিজ্য টাকা -রুপির মাধ্যমে শুরু হয়ে গেছে। যা আরও লাভজনক হবে। আর চুক্তির কারণে এবার থেকে বেশি করে দুই দেশের নদী পথেও ব্যবসা বাড়বে। ট্রানজিট কার্গোগুলো কলকাতার পোর্ট থেকে চিটাগাং, মোংলা, আশুগঞ্জ, পানগাও এবং পায়রা পোর্ট অর্থাৎ ভারত ও বাংলাদেশের স্থানীয়রা ব্যবসা করতে পারবে। এটাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
অন্যদিকে, একটি সময় উপযোগী পদক্ষেপ জানিয়েছেন টিএম ইন্টারন্যাশনাল লজিস্টিক লিমিটেড। সংস্থাটি টাটা গ্রুপের সাথে জয়েন্ট ভেঞ্চারে কাজ করে। লজিস্টিক বিভাগের প্রধান অতনু বসু বলেছেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সড়কপথ ও রেলপথে পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে জলপথ। কারণ জলপথে পণ্য পরিবহন যথেষ্ট নিরাপদ। এমন অনেক পণ্য আছে যেগুলি সড়কপথে বা রেলপথে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সেক্ষেত্রে সেই সবপণ্য কনটেইনার জাত করে তা জলপথে রপ্তানি করা হলে খুব নিরাপদে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।
কলকাতার প্যারাগন লজিস্টিক ইনফো সার্ভিসে কাজ হল বন্দরে মালামাল রোডিং আনলোডিং এর কাজ। সেই সংস্থার মালিক আবেশ আহমদ ওয়ারসি বলেছেন, অনেকদিন ধরে আমরা এই চুক্তির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যত বেশি আমদানি-রপ্তানি বাড়বে তত দুই দেশের জন্য সুখবর।
বিশিষ্ট শিল্পপতি মোহাম্মদ রুহুল একজন ক্রীড়াপ্রেমী এবং বরাবর দুই বাংলাকে ভালোবাসেন। যে কারণে একাধারে তিনি চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট। এবং বাংলাদেশ গণমাধ্যমের ভারতীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে তৈরি ইন্দো-বাংলা প্রেস ক্লাবের সদস্য। এদিন সন্ধ্যায় প্রেসক্লাবের সদস্যদের কিছু সময় কাটবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, সেপ্টম্বর ২৫, ২০২২
ভিএস/এমএম