কলকাতা: আর কয়েকমাস পরেই ভারতের জাতীয় অর্থাৎ লোকসভা নির্বাচন। তার আগে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন।
সেই ‘আভাস’ যাচ্ছে বর্তমান ক্ষমতাসীন বিজেপির পক্ষেই। পাঁচ রাজ্যের মধ্যে যে চারটিতে ভোট গণনা হয়েছে, তার মধ্যে তিনটিতেই বিজেপির জয়জয়কার। একটিতে কেবল এগিয়ে আছে একসময়ের প্রভাবশালী দল কংগ্রেস।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড় ও তেলেঙ্গানা রাজ্যে ভোট গণনা শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে আসতে থাকে ফলাফল। তেলেঙ্গানা ছাড়া বাকি তিন রাজ্যেই বিজেপির এগিয়ে থাকার খবর আসতে থাকে। কেবল তেলেঙ্গানায় কংগ্রেসের এগিয়ে থাকার খবর আসে।
শেষ পর্যন্ত ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, মধ্যপ্রদেশে ২৩০ আসনের মধ্যে বিজেপি ১৬৬ আসনে এগিয়ে আছে। এখানে কংগ্রেস এগিয়ে ৬৩ আসনে। এ রাজ্যে সরকার গড়তে দরকার ১১৬ আসন।
রাজস্থানে ১৯৯ আসনের মধ্যে ১১৬ আসনে এগিয়ে বিজেপি, কংগ্রেস ৬৮ এগিয়ে আসনে। এ রাজ্যে সরকার গড়তে দরকার ১০০ আসন।
ছত্তিশগড়ে ৯০ আসনের মধ্যে ৫৩ আসনে এগিয়ে বিজেপি, কংগ্রেস এগিয়ে আছে ৪৫ আসনে। এ রাজ্যে সরকার গড়তে দরকার ৪৬ আসন।
অপরদিকে, তেলেঙ্গানায় ১১৯ আসনের মধ্যে ৬৪ আসনে এগিয়ে কংগ্রেস। সেখা ক্ষমতাসীন দল ভারত রাষ্ট্রীয় সমিতি (বিআরএস) ৪০ আসনে এগিয়ে। এ রাজ্যে সরকার গড়তে দরকার ৬০ আসন।
যদিও চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষিত হলে দু-একটি আসনের ফলাফল পরিবর্তন হতে পারে।
ভোটের আগে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছিলেন, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে জিতবে কংগ্রেস। রাজস্থানে যেহেতু পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদলের রেওয়াজ রয়েছে, তাই সেখানে জিততে পারে বিজেপি।
কিন্তু কংগ্রেসের বাড়া ভাতে ছাই ঢেলে তিন রাজ্যেই সরকার গঠনের পথে নরেন্দ্র মোদির বিজেপি। ছত্তিশগড়ে বিজেপির ঘর অগোছালো থাকলেও তার সুবিধা তুলতে পারেনি কংগ্রেস। কেবল তেলেঙ্গানায় সম্ভাব্য জয়েই তাদের সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে।
এদিকে, মিজোরামে ভোট গণনা হবে সোমবার (৪ ডিসেম্বর)। সেখানকার ফলাফলের দিকেও তাকিয়ে থাকবে বিজেপি-কংগ্রেসসহ জাতীয় ও আঞ্চলিক দলগুলো।
দুশ্চিন্তায় তৃণমূল?
আলোচনা চলছে, চার রাজ্যের এই ফলাফল কতটা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিকে প্রভাবিত করবে? জাতীয় রাজনীতিতেই বা এর প্রভাব কী? বস্তুত, হিন্দিভাষী বলয়ের তিন রাজ্যের ভোট ফলাফলের দিকে কংগ্রেসের যতটা নজর ছিল, তার চেয়ে হয়তো ছিল পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূলের। পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, যে ধারা হিন্দি বলয়ে দেখা যাচ্ছে, তা তৃণমূলের জন্য হতাশার বৈকি।
শুধু তৃণমূল নয়, এই ফলাফল মহারাষ্ট্রের শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে এবং বিহারে রাজনৈতিক দল জেডিইউ প্রধান, তথা রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারদের জন্যও হতাশার। তার কারণটাও পরিষ্কার।
২০১২ সালের পর থেকে হিন্দিবলয়ে বিজেপির কাছে ক্রমশ জায়গা হারিয়েছে কংগ্রেস। তাদের মূল্যেই বেড়েছে বিজেপি। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতীশ কুমাররা দেখতে চাইছিলেন, বিজেপির সঙ্গে যেখানে কংগ্রেসের মুখোমুখি লড়াই সেখানে কতটা ভালো ফল করে দেখাতে পারেন রাহুল গান্ধী-মল্লিকার্জুন খাড়্গেরা। দেখা গেল, তারা ডাহা ফেল করেছেন। এ ফলাফলে কলকাতার বিজেপির সদর দপ্তরে উল্লাসের একটাই সুর, ‘মোদি হ্যায় তো মুমকিম হ্যায়’ (মোদি আছেন তো আশা আছে)।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০২৩
ভিএস/এইচএ/