ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের দ্বার উন্মোচন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৪
কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের দ্বার উন্মোচন

কলকাতা: আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা যদি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বইমেলা হয়, তবে বাংলাদেশের অমর একুশে বইমেলা পৃথিবীর দীর্ঘতম বইমেলা। বিশ্বে এর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নাই—৪৭তম কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের উন্মোচনের পর এমন কথা বলেছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা।

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) ৪৭তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এরপর ফিতা কেটে বাংলাদেশ প্যাভেলিয়নের দ্বার উন্মোচন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমেদ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, পশ্চিমবঙ্গ কবিতা একাডেমির চেয়ারম্যান কবি সুবোধ সরকার, কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস।

নূরুল হুদা বলেন, কলকাতা আন্তর্জাতিক বইবেলার মতো আমরাও ঢাকা আন্তর্জাতিক বইমেলা করার পরিকল্পনা নিয়েছি। এছাড়া অতি সম্প্রতি আমরা শুরু করেছিলাম, কিন্তু বিশেষ রাজনৈতিক কারণে সেটা করতে পারিনি। এবারে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসের দিকে করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেটা হলো পশ্চিমবঙ্গের বাংলা বই এবং বাংলাদেশের বই মিলিয়ে বাংলা একাডেমিতেই দুই সপ্তাহ যাবত বাংলাসাহিত্য উৎসব করার, যা প্রতিবছরে একবার বাংলাদেশে হবে একবার পশ্চিমবঙ্গে হবে।

খলিল আহমেদ বলেন, কলকাতা বইমেলায় আমরা অংশগ্রহণ করতে পেরেছি, এরজন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং ভারত সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ। আমরা সব সময় বাংলাদেশের বইয়ের প্রমোশনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকি। ফলে কলকাতা বইমেলায় এ ধরনের অংশ নেওয়া আমাদের কাছে বিশেষ সহযোগিতার বিষয়। বাংলার বইয়ের যে মাধুর্য, বাংলার বইয়ের যে প্রাচুর্য, সেটি কিন্তু বাংলাদেশের বইয়ে প্রচুর পরিমাণে আছে। বর্তমানে বাংলাদেশের যে প্রকাশনা শিল্প গড়ে উঠেছে তা বিশ্বমানের। ফলে আমাদের বইয়ের চাহিদা যে ভারতে তৈরি হচ্ছে, তা কলকাতা বইমেলায় পাঠকদের অংশগ্রহণ দেখলেই বোঝা যায়। তবে আমাদের পরিকল্পনা আছে সব সময় যাতে বাংলাদেশের বই ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গে পাওয়া যায়, তার ব্যবস্থা করার।



সম্প্রতি ইউনেস্কো স্বীকৃতি পেয়েছে ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র। সেই ঐতিহ্যগত কারুশিল্পকে প্রাধান্য করে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন সাজিয়ে তোলা হয়েছে রিকশাচিত্রে। ৩,২০০ স্কয়ার ফুটের এই প্যাভিলিয়নে অংশ নিয়েছে ১২টি সরকারি ও ৩৩টি বেসরকারি প্রকশনা সংস্থা। মেলায় অংশ নেওয়া সরকারি সংস্থাগুলো হলো—গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

শনিবার (২০ জানুয়ারি) কলকাতা বইমেলায় পালিত হবে ‘বাংলাদেশ দিবস’। সেদিন সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণের অডিটরিয়ামে আয়োজন করা হবে ‘সংযোগের সেতুবন্ধন: সাহিত্য, সংস্কৃতি ও শিল্পের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনার। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন খলিল আহমদ।

উপস্থিত থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, বিশিষ্ট নাট্যকর্মী রামেন্দু মজুমদার, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, পশ্চিমবঙ্গ কবিতা একাডেমির চেয়ারম্যান কবি সুবোধ সরকার, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক চিন্ময় গুহ, কলকাতা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড সভাপতি ত্রিবিদ চট্টোপাধ্যায়, সাধারণ সম্পাদক সুধাংশু শেখর দে। আলোচনা সভায় সহপতিত্ব করবেন কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস।

ওই দিন দ্বিতীয় ধাপে বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিল্পীদের পরিবেশনায় এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সঙ্গীত পরিবেশন করবেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। পাশাপাশি সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকে ‘আমার পরিচয়’ কবিতা অবলম্বনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের একটি বিশেষ পরিবেশনা থাকবে।

বাংলাদেশের পাশাপাশি এবারে কলকাতা বইমেলায় বিগত বছরের মতো অংশ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, ইতালি, থাইল্যান্ড, আর্জেন্টিনা, পেরু, কলম্বিয়া, কোস্টারিকা, গুয়াতেমালা, মেক্সিকোসহ ২০টি দেশ। প্রায় ১২ বছর পর কলকাতা বইমেলায় অংশগ্রহণ করছে জার্মানি।

এছাড়াও ভারতের প্রায় প্রতিটি রাজ্যের প্রকাশনা সংস্থা ও তিনশোর বেশি লিটন ম্যাগাজিন অংশ নিয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে বিশ্বের লেখক পাঠকের মনের আদান প্রদানে, বইমেলা প্রাঙ্গণে (সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্ক) মেলা চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।