ঢাকা, মঙ্গলবার, ১২ ভাদ্র ১৪৩১, ২৭ আগস্ট ২০২৪, ২১ সফর ১৪৪৬

ভারত

নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুন: বিশেষ আদালত গঠনের প্রস্তাব মমতার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২৪
নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুন: বিশেষ আদালত গঠনের প্রস্তাব মমতার

কলকাতা: কলকাতার আর জি কর মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার চলমান তদন্ত নিয়ে মুখ খুললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তার ভাতিজা ও তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গোটা ভারতজুড়ে ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা।

বৃহস্পতিবার নিজের এক্স হ্যান্ডলে একটি লম্বা পোস্ট করেন অভিষেক। এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে অভিষেক লেখেন, গত ১০ দিন ধরে, যখন গোটা দেশ আর জি কর মেডিকেল কলেজের ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে, ন্যায়বিচারের দাবি করছে, তখন একাধিক রিপোর্ট বলছে যে, এই সময়ে সারা দেশে ৯০০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।  

তিনি লেখেন, সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ৯০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় ৪টি এবং প্রতি ১৫ মিনিটে একটি ঘটনার খবর সামনে আসছে। তার অভিমত, ধর্ষণবিরোধী কঠোর আইন আনা উচিত। আমাদের কঠোর আইন দরকার। যেখানে ৫০ দিনের মধ্যে গোটা বিচার প্রক্রিয়ার নিষ্পত্তি এবং দোষী সাব্যস্ত করার আদেশ থাকবে। সেই সঙ্গে অপরাধীদের জন্য কঠোরতম শাস্তির বিধান থাকে যেন।

অভিষেকের এ পোস্ট দেখে দেরি না করে বৃহস্পতিবার বিকেলেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লেখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, গোটা দেশে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে চলেছে এবং কিছুক্ষেত্রে ধর্ষণের পরে খুনের ঘটনাও ঘটছে। এ বিষয়ে আপনার দৃষ্টিপাত করছি। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গোটা দেশে গড়ে ৯০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এটি খুবই লজ্জাজনক।  

চিঠিতে মমতা লেখেন, এটি সমাজ ও জাতির আস্থা এবং বিবেককে নাড়া দিয়েছে। এটি বন্ধ করা আমাদের বাধ্যতামূলক কর্তব্য। যাতে নারীরা নিরাপদ ও সুরক্ষিত বোধ করেন। তিনি এ ধরনের মামলার দ্রুত বিচারের জন্য ফাস্ট ট্র্যাক বিশেষ আদালত গঠনের প্রস্তাব করেন, যাতে অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যায়। এ ধরনের মামলার বিচার ১৫ দিনের মধ্যে শেষ করা উচিত বলে মমতা দাবি জানিয়েছেন।

কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী যখন এ ধরনের চিঠি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে লিখছেন, তখন পশ্চিমবঙ্গের নির্যাতিতা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার মামলার  দ্বিতীয় শুনানিতেও সুপ্রিম কোর্টের বিচারকের ক্ষোভের মুখে পড়ল রাজ্য সরকার। শুনানির একপর্যায়ে পাবলিক প্রসিকিটরকে বলতে শোনা যায়, আমার ৩১ বছরের কর্মক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা সামনে আসেনি।

বিচারককে বলতে শোনা যায়, অবাক হচ্ছি আগেই বলে দেওয়া হলো অস্বাভাবিক মৃত্যু? কীভাবে সম্ভব? তাহলে ময়নাতদন্তের প্রয়োজন কী ছিল? আর যখন পুলিশ বুঝতেই পেরেছিল এটি অস্বাভাবিক মৃত্যু কেন তাহলে প্রথমে আত্মহত্যা বলা হলো? এর কোনো উত্তর দিতে পারেননি রাজ্য সরকারের উকিল।  

এরপরই বিচারক রাজ্য সরকারের আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বলকে বলেন, পরবর্তী শুনানিতে রাজ্যের কোনো দায়িত্বশীল পুলিশকে আনবেন। আমরা যে প্রশ্ন করব, তার জন্য সঠিক উত্তর তিনি দিতে পারেন।  

এরপরই বিচারক তদন্তের দায়িত্ব নেওয়া সিবিআইকে প্রশ্ন করেন প্রাথমিক তদন্তে কী উঠে এসেছে? উত্তরে তদন্তকারী সংস্থাটি জানায়, তারা একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তবে ঘটনার পাঁচ দিন পর তদন্তের দায়িত্ব তাদের দেওয়া হয়েছে। অনেক প্রমাণ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এ পাঁচ দিনে অনেক কিছু বদলে গেছে।

এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৫ সেপ্টেম্বর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২৪
ভিএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।