কলকাতা: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বনগাঁ অঞ্চলে নকল দশ রুপির কয়েনের সমস্যায় জেরবার হচ্ছেন বাংলাদেশিরা। অনেকের হাতেই নকল দশ রুপির কয়েন চলে আসছে, এবং পরবর্তী সময়ে সেই দশ রুপির কয়েন ব্যবহার করতে গেলে নকল বলে কেউ সেই কয়েন গ্রহণ করতে চাইছে না।
এই সমস্যার ছবি প্রথম চোখে পড়ে রোববার (৬ নভেম্বর) সদ্য ভারতে পা রাখা যশোর থেকে আসা এক ব্যক্তি যখন পেট্রাপোল থেকে বনগাঁ স্টেশনে যাওয়ার জন্য সিএনজিতে ওঠেন। বর্তমানে সিএনজি ভাড়া তিরিশ রুপি। সেই হিসেবে নামার সময় তিনি দুটি দশ রুপির নোট এবং একটি দশ রুপির কয়েন দেন। কয়েনটি নিতে অস্বীকার করেন সিএনজি চালক। তিনি জানান দশ রুপির কয়েনটি তার কাছে নকল বলে মনে হচ্ছে।
এই সমস্যাকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। যদিও ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে দশ রুপির কয়েন চলবে না বলে কোনও ঘোষণা দেয়া হয়নি। কিন্তু বাজারে নকল দশ রুপির কয়েন ছেয়ে যাওয়াতে এই ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
বিতর্ক জোরালো হয়ে ওঠায় বাংলানিউজের প্রতিনিধি দশ রুপির কয়েনটি পরীক্ষা করেন। দেখা যায় কয়েনটি আদতে নকল। বাংলাদেশ থেকে আসা পর্যটক জানান তিনি প্রথমে কারেন্সি ভাঙিয়ে পেট্রাপোলে নাস্তা করেন। একশ রুপির নোটের খুচরো হিসেবে দোকানি তাকে অন্যান্য নোটের সঙ্গে ওই কয়েনটি দেয়।
এ অঞ্চলের ভ্যান থেকে সিএনজি চালক এবং বিভিন্ন দোকানে কথা বলে জানা গেছে বাংলাদেশিরা অনেকেই এই সমস্যায় পড়ছেন। এই সমস্যা শুধু বনগাঁ নয়, গোটা কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গে এই সমস্যা ছড়িয়েছে।
এই সমস্যা শুধু বিদেশিদের নয় ভারতীয়দেরও। শুধুমাত্র একটি বা দুটি ঘটনায় সীমাবদ্ধ নেই। সমস্যার জাল ছড়িয়েছে অনেকটাই। এর ফলে বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষেরা বিভিন্ন জায়গায় নাকাল হচ্ছেন। সীমান্ত এলাকায় এই নিয়ে কথা বললে, অনেকেই জানতে চাইছেন তাদের হাতে নকল দশ রুপির কয়েন এসে পড়লে কি করবেন।
যতদূর জানা গেছে ভারতের উত্তর প্রদেশে থেকে এই নকল কয়েনগুলি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ কারখানাগুলো খুঁজে পেলেও দেশ থেকে সমস্ত জাল কয়েন শেষ করতে পারেনি। তার ফলেই এই সমস্যা।
সহজভাবে একটু লক্ষ্য করলে নকল কয়েন এবং আসল দশ রুপির কয়েনের সঙ্গে পার্থক্য পরিস্কারভাবে বোঝা যায়। নকল দশ রুপির কয়েনে রুপি-এর চিহ্নটি নেই। অাসল কয়েনে উপরের দিকে রুপির চিহ্ন এবং তার নিচে ১০ অক্ষরটি সংখ্যায় লেখা থাকে। এছাড়া অারও কিছু পার্থক্য থাকে। তবে এইটুকু জানলেও চলবে।
বাংলাদেশ থেকে আগতদের দশ রুপির কয়েন সম্পর্কে সতর্ক থাকা উচিত। নতুবা কয়েন নিয়ে তারা সমস্যায় পড়তে পারেন। বিষয়টা দশ রুপি কয়েনে সীমাবদ্ধ নয়। প্রতিটি অাগতদের কাছে একটি বা দুটি করে নকল কয়েন থাকে তাহলে হিসেবটা ভেবে দেখার মতন হয়। তাই ভারতে যাওয়া বাংলাদেশিদের দশ রুপির কয়েন সম্পর্কে বিশেষভাবে সতর্ক থাকার অনুরোধ করা হচ্ছে। ভালো করে দেখে তবেই যেন তারা কয়েনগুলি গ্রহণ করেন।
তবে অনেক ক্ষেত্রে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে বৈধ কয়েনও অনেকে নিতে চাইছেন না। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার ভারতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়েছে বৈধ কয়েন গ্রহণ করতে না চাওয়া আইনানুগ অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৬
ভিএস/আরআই