রাইটার্স বিল্ডিং ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিতে ১৩ জন নিহত হন, আহত হন আরও ২০০ জন। এটাই ’৯৩-এর ২১ জুলাইয়ের ইতিহাস।
প্রতিবছর এই দিনটিকে স্মরণ করে কর্মীদের চাঙ্গা করা হয়। আজ বাংলায় ফিরে এলো সেই দিন। শুক্রবার (২১ জুলাই) কলকাতা আরও একটি ইতিহাসের সাক্ষী হতে চলেছে।
কলকতা নগরীর সব পথ মিলেছে ধর্মতলায় টিপু সুলতান মসজিদের সামনে। জনসমাবেশের নিরিখে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রস্তুতি চূড়ান্ত মা-মাটি-মানুষের। তৃণমূল নেতৃত্ব এমনটাই দাবি করেছে।
ধর্মতলার শহীদ দিবসে জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে তৃণমূল নেত্রী কী বার্তা দেন, সবার নজর সেদিকেই। তবে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে যে জিহাদের ডাক দেবে তা নিশ্চিত।
এবার রেকর্ড জমায়েতের প্রশ্নে তৃণমূলের সবাই আত্মবিশ্বাসী। এই বিশাল জমায়েত সামাল দিতে রাস্তায় নেমেছে আড়াই
হাজার কলকাতা পুলিশ। প্রতিবছরের মতো এবারও গোয়েন্দা প্রধানের নেতৃত্বে সাদা পোশাকে গোয়েন্দাদের একটি দল জনতার ভিড়ের মধ্যে মিশে থাকবে। আপদকালীন পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে, ১৮টি অ্যাম্বুলেন্সও থাকবে।
এদিকে সমাবেশে আসা জনতার সবাই যাতে সুষ্ঠুভাবে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লাইভ দেখতে পারেন বা বক্তব্য শুনতে পারেন, তার জন্য রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ, লেনিন সরণি, বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, জওহরলাল নেহরু রোডের মতো একাধিক জায়গায় জায়ান্ট স্ক্রিনের ব্যবস্থা করছে তৃণমূল কংগ্রেস।
প্রতিবারের মতো জনসমুদ্রে দাড়িয়ে দলীয় কর্মীদের ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা করেন তৃণমুল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূলের বার্ষিক এই সমাবেশ দলের কর্মীদের কাছে শুধু নিছক কোনো কর্মসূচি নয়। মা-মাটি-মানুষের ভাবাবেগ জড়িয়ে থাকে এই সমাবেশের পরতে পরতে। তবে এই সমাবেশ শুধু আর শহীদ দিবসে সীমাবদ্ধ নয়, পরিণত হয়েছে একটি রাজনৈতিক দিবসে।
আগামী বছর পঞ্চায়েত নির্বচন। এই নির্বাচন শাসক দল তাদের ক্ষমতা ধরে রাখতে পারলে ২০১৯ এ পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একথা নিশ্চিত।
সেই কথা মাথায় রেখেই এবারেও অন্যান্য বছরের মতো দু’দিন আগে থেকেই দূরবর্তী জেলা থেকে এসেছে দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। বৃহস্পতিবার থেকেই তাদের আতিথেয়তায় কোনো ত্রুটি না রাখাকেই চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছে রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব। কলকাতার মিলন মেলা, ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র ও কসবার গীতাঞ্জলী স্টেডিয়ামসহ মধ্য কলকাতার বিভিন্ন ধর্মশালা ও কমিউনিটি হল মিলিয়ে লক্ষাধিক মানুষের থাকা-খাওয়া ও রাত্রিবাসের বন্দোবস্ত করা হয়েছিলো এই সমাবেশকে ঘিরে।
এখন অপেক্ষা শুধু কী দিকনির্দেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা, তার কর্মী সমর্থকদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৭
ভিএস/এমএ