রপ্তানি ও অনলাইনে কেনাকাটার সুবিধায় বেড়েছে বড়ির চাহিদা। তাই উৎপাদন বাড়াতে রাজ্যের সবচেয়ে বড়ি উৎপাদন অঞ্চল উত্তর ২৪পরগণা জেলার বড়ি শিল্পে একগুচ্ছ নতুন পরিকল্পনা আনতে চলেছে রাজ্য সরকারের অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দপ্তর।
উত্তর ২৪ পরগণার একাধিক এলাকায় বড়ি শিল্প গড়ে উঠেছে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা যায়, জেলা শিল্প কেন্দ্রের পক্ষ থেকে নৈহাটিতে একটি সমীক্ষা করা হয়েছিল। ওই সমীক্ষায় দেখা যায়, সেখানে বড়ি তৈরির ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৩শটি ইউনিট রয়েছে। এখানে এমন ইউনিটও রয়েছে, যাদের বছরে লাভ এক কোটি রুপির চেয়ে বেশি। সবচেয়ে ছোট ইউনিটগুলির লাভও কম নয়, বছরে ৬০ হাজার রুপির মতো।
বর্তমানে এখানকার বড়ি কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন শহরে সরবরাহ হচ্ছে। নৈহাটির বড়ির স্বাদেও জনপ্রিয়। এর আগে এই শিল্পের দিকে কেউই নজর দেয়নি। ফলে গতানুগতিকভাবেই চলছিল। এই প্রথম বর্তমান রাজ্য সরকার একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছে। অ্যাপসের মাধ্যমে বিক্রি, এমনকী বিদেশে বাঙালির পাতে বাংলার বড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্যও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
উত্তর ২৪পরগণা জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার প্রণবকুমার নস্কর বাংলানিউজকে বলেন, বিদেশে যে কোনো খাদ্যদ্রব্য পাঠাতে গেলে গুণমান এবং প্যাকেজিং নিখুঁতভাবে করতে হয়। তাই এখানকার বড়ি শিল্পে এ বিষয়টির উপর ইতোমধ্যেই বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব প্যাকেজিং’-এর মূল নজরদারিতে থাকছে। কী কী পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে? প্রশ্নে প্রণবকুমার বলেন, প্রথমত, ৩শ ইউনিট নিয়ে সরকারিভাবে একটি সমবায় করা হবে। বর্তমানে যা নেই। এই সমবায় হলে সরকারি অনেক সুবিধায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।
দ্বিতীয়ত, স্থান নির্বাচন করে বড়ি তৈরির মেশিন বসানো হবে। এখনও হাতেই বড়ি দেওয়া হয়। তারপর রোদে শুকানো হয়। কিন্তু মেশিনে কাঁচামাল দিলেই একেবারে বড়ি শুকনো হয়ে বেরোবে। যেভাবে বিস্কুট তৈরি হয়। সমবায়ের মাধ্যমে সবাই নিজ নিজ প্রয়োজনে ভাড়া দিয়ে মেশিন ব্যবহার করতে পারবেন।
তৃতীয়ত, বর্তমানে এ শিল্পের সঙ্গে যুক্তরা আলাদা আলাদা কাঁচামাল কেনেন। এতে খরচ বেশি পড়ে। তাই একসঙ্গে অনেক কাঁচামাল কিনে সংরক্ষণ করে রাখার জন্য একটি কেন্দ্রীয় স্টোর রুম তৈরি করা হবে। একসঙ্গে অনেক কাঁচামাল কিনলে সস্তা পড়বে। গচ্ছিত সেই কাঁচামাল যার যখন প্রয়োজন পড়বে সেখান থেকে তিনি নিতে পারবেন।
চতুর্থত, এখানকার বড়ির নিজস্ব কোনো ‘ব্র্যান্ড নেম’ নেই। সমবায়ের মাধ্যমে তা করা হবে। পঞ্চমত, ব্যবসায়ীরা আলাদা আলাদাভাবে পাইকারি বাজারে বড়ি বিক্রি করেন। সমবায় তৈরি হলে তার মাধ্যমে সরাসরি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, এমনকী বিদেশেও নিজেরাই বড়ি রপ্তানি করতে পারবেন। এতে লাভের পরিমাণ অনেক বাড়বে।
তিনি বলেন, এখন অনলাইন শপিংয়ের যুগ। অনলাইনে চাহিদা বেড়েছে। তাই অনলাইনকে অন্যতম বাজার ধরে বড়ি বিক্রির কথা ভাবা হয়েছে। এর জন্য আরও কিছুদিন সময় লাগেবে আমাদের।
বাংলাদেশ সময়: ০২৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৮
ভিএস/এএ