ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

প্রথম নারী সুপারস্টারের উজ্জ্বলময় যুগের অবসান 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৮
প্রথম নারী সুপারস্টারের উজ্জ্বলময় যুগের অবসান  শ্রীদেবী

কলকাতা: শোকাহত ভারতীয় চলচ্চিত্র জগত। শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতেই দুবাইয়ে খসে গিয়েছে ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের এক উজ্বল নক্ষত্র। দেশ হারিয়েছে তার প্রথম নারী সুপারস্টারকে। তিনি শ্রীদেবী। 

তামিলনাড়ুর শিবকাশীতে ১৯৬৩ সালের ১৩ আগস্ট শ্রীদেবীর জন্ম। মাত্র চার বছর বয়সে শিশুশিল্পী হিসাবে তার পরিচয় হয় বিনোদন জগতের সঙ্গে।

দক্ষিণী ছবি দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও দাক্ষিণাত্যেই নিজেকে আবদ্ধ রাখেননি তিনি। অভিনয় দিয়ে জয় করেছেন গোটা ভারত।
 
১৯৭৫ সালে ‘জুলি’ ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে বলিউডে প্রবেশ করেন। এরপর ‘সোলয়াঁ সাওয়ান’ ছবি দিয়ে পাকাপাকিভাবে বলিউডে পা রাখেন শ্রীদেবী। ‘হিম্মতওয়ালা’র পর হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। চার দশক ধরে অজস্র হিন্দি ছবিতে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন শ্রীদেবী।  

হিন্দি ছবির পাশাপাশি তেলুগু, কন্নড়, তামিল, মালয়ালমসহ অন্য ভাষার ছবিতেও একই দাপট দেখিয়েছেন তিনি। বাণিজ্যিক ছবির পাশাপাশি অন্য ধারার ছবিতেও ছিলেন সমান সাবলীল। নানা রঙের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। চালবাজ, লামহেসহ পাঁচটি ছবির জন্য পেয়েছেন ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড। ২০১৩ সালে পান পদ্মশ্রী সম্মান।

তার অভিনীত চরিত্রগুলির মতোই শ্রীদেবীর কেরিয়ারও ছিল বর্ণময়। দক্ষিণে যেমন তাকে এন টি আর, এম জি আর এবং জয়ললিতার মতো তিন অভিনেতা-রাজনীতিকের সঙ্গে কাজ করতে দেখা গিয়েছে, তেমনই বলিউডে বাবা-ছেলে ধর্মেন্দ্র ও সানি দেওল বা বিনোদ খান্না ও অক্ষয় খান্নার সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। রাজেশ খান্না, অমিতাভ বচ্চন, মিঠুন চক্রবর্তী, কমল হাসানসহ একাধিক অভিনেতার সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন তিনি। তবে, শ্রীদেবীর জুটি হিসাবে জিতেন্দ্র, অনিল কাপুর ও ঋষি কাপুরের নাম আলাদাভাবে উচ্চারিত হয়। সব থেকে বেশি অভিনয় করেছেন জিতেন্দ্র’র সঙ্গে। মোট ১৬টি ছবিতে জুটি বাঁধেন তারা।  
  
১৯৯৬ সালে প্রযোজক বনি কাপুরের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের দুই কন্যা জাহ্নবী ও খুশি। ১৯৯৭ সালে অনিল কাপুর ও ঊর্মিলা মাতণ্ডেকরের সঙ্গে ‘জুদাই’ ছবিতে অভিনয়ের পর রুপালি পর্দা থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। এরমধ্যে ২০০৪ সালে অক্ষয় কুমার-শ্রীদেবী অভিনীত ‘মেরি বিবি কা জবাব নেহি’ মুক্তি পেলেও ছবিটির শ্যুটিং হয়েছিল ১০ বছর আগে।  

প্রায় দেড় দশক পর ফের ছবির জগতে শ্রীদেবীর কামব্যাক হয় গৌরী শিণ্ডের ‘ইংলিশ ভিংলিশ’ ছবির মাধ্যমে। গত বছর মুক্তি পায় শ্রীদেবীর ‘মম’। এটিই তার মুক্তি পাওয়া শেষ ছবি। শাহরুখ খানের ‘জিরো’ ছবিতে তাকে পাওয়া যাবে অতিথি শিল্পী হিসাবে। এই ছবিতেই শেষবারের জন্য দেখা যাবে রুপালি দুনিয়ার এই গ্ল্যামার গার্লকে।
 
সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত নবদীপ সিং সুরি জানান, আমরা শ্রীদেবীর পরিবারের সঙ্গে সবরকম সহযোগিতা করছি। তার মরদেহের প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত সেরে ফেলা যায় সে দিকে নজর রাখা হয়েছে।

অনিল আম্বানির বিশেষ বিমানে করে দুবাই থেকে মুম্বই ফিরিয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে তার মরদেহ। সবকিছু সময়মতো হয়ে গেলে সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ মুম্বাই পৌঁছাবে শ্রীদেবীর মরদেহ। এরপর সম্পন্ন হবে গ্ল্যামার কুইনের শেষকৃত্য।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৩ ঘণ্টা, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮
এসএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।