ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

দোলের মধ্য দিয়ে বসন্ত বরণ করলো পশ্চিমবঙ্গবাসী

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৩ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০১৮
দোলের মধ্য দিয়ে বসন্ত বরণ করলো পশ্চিমবঙ্গবাসী একে অপরকে আবির মাখিয়ে দোল উৎসবে মেতেছে পশ্চিমবঙ্গবাসী। ছবি: ভাস্কর সরদার

কলকাতা: ‘ওরে গৃহবাসী-খোল দ্বার খোল-লাগলো যে দোল’, রবি ঠাকুরের এই গানটি বসন্তের অন্যতম উৎসব দোলকে কেন্দ্র করেই। বসন্ত এসেছে কয়েকদিন আগে। 

বলা হয়, বসন্তের শিহরণ মনের মনিকোঠা রঙিন করে তোলে। এসময় রঙিন মনের ভাব বিনিময় হয় পরস্পরের মধ্যে।

তাই পশ্চিমবঙ্গবাসী দোলকে কেন্দ্র করে নানা রঙের আবির খেলার মধ্য দিয়ে বরণ করে নেয় বসন্তকে। ফাল্গুনি পূর্ণিমার দিনই দোলযাত্রার মধ্য দিয়ে বসন্তোৎসবের আয়োজন হয় শান্তিনিকেতন থেকে শুরু করে গোটা কলকাতায়।  

ভারতের বিভিন্ন উৎসবের মধ্যে অন্যতম দোল উৎসব। দোল কথাটা এসেছে দোলনা থেকে৷ রাধা-কৃষ্ণকে দোলনায় বসিয়ে পূজোর মাধ্যমে তৈরি করা হয় এক ধরনের প্রেমের আবহ। সেই প্রেম বোধ হয় ব্যর্থ হতো বসন্ত ছাড়া। তাই দিনটি পালনের জন্য এই ফাগুন মাসকেই বেছে নেওয়া হয়। রঙের এই উৎসব মূলত ভারতবর্ষ থেকে শুরু হলেও এখন আর দেশের অন্দরে থেমে থাকে না, রঙের এই খেলা কাঁটাতারের বেড়া টপকে ছড়িয়ে পড়েছে এশিয়া, ইউরোপ এমনকি উত্তর আমেরিকাতেও৷ আওয়াজ ওঠে ‘হোলি হ্যায়!’
 
রঙের খেলায় সবাইকে মাতিয়ে দোলযাত্রা উৎসব আর কোনও ধর্মের বেড়াজালে আবদ্ধ নেই।  

দোল উৎসব শান্তিনিকেতনে অন্যমাত্রা পায়। যা বসন্তোৎসব নামেও পরিচিত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়কাল থেকেই চলে আসছে এই উৎসব। বিশ্বকবি দোলযাত্রার ধর্মীয় অংশকে এড়িয়ে দোল উৎসবকে ‘বসন্ত উৎসব’-এ রূপান্তর করেছিলেন। এদিনে শান্তিনিকেতনে আবির ও ফুলের পাপড়ি দিয়ে দোল খেলা হয়। আগের দিন থেকে চলে সাংস্কৃতিক উৎসব।  

এখনও কলকাতার বনেদি বাড়িগুলোতে দোলের উৎসব দুর্গাপূজোর মতোই জাঁকজমকপূর্ণ। দোল উপলক্ষে বিভিন্ন বনেদি বাড়িতে প্রচুর লোক সমাগম হয়। স্বাভাবিক ভাবেই তাদের আপ্যায়নের জন্য থাকে প্রচুর খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা। তবে, এখন আর আগেকার মতো বাড়িতে বানানো হয় না মিষ্টি। আগে খাওয়া-দাওয়ার পাশাপাশি আসর বসতো গান-বাজনার। প্রায় সব পুরনো বাড়িতেই। সেই ধারাবাহিকতায় এখনও বেশ কয়েকটি বনেদি বাড়িতে গান-বাজনা আর খানা-পিনার চল রয়েছে।  

বাংলায় বলে ‘দোল’। আর ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে একে ভিন্ন ভিন্ন নামে ডাকা হয়। যেমন উড়িষ্যায় দোলোৎসব, পশ্চিম, উত্তর ও মধ্য ভারতে হোলি, গোয়ায় বলা হয় শিমাগা আবার দক্ষিণ ভারতে বলে কামায়ন। উত্তর ভারতে হোলি উৎসবটি বাংলার দোলযাত্রার পরদিন হয়। অঞ্চল ভেদে নামে ভিন্নতা থাকলেও উদযাপনের রীতি এক। আবির

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দোল উৎসবে রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানান। সেভাবেই দোল উৎসব উদযাপন করেছে পশ্চিমবঙ্গবাসী।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০১৮
ভিএস/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।