পশ্চিমবঙ্গের বিজ্ঞানীদের এই সাফল্যকে ইতোমধ্যে স্বীকৃতি দিয়েছে কেন্দ্র সরকার।
মিলেছে কুড়ি বছরের জন্য মেধাস্বত্ত্ব সংরক্ষণের সুযোগ।
তা একেবারেই সহজলভ্য হয়ে যাবে এবং সাধারণের হাতের মুঠোয় চলে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ক্যানাসার রোগের চিকিৎসায় বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কার মানবদেহে প্রয়োগের ক্ষেত্রে আরও কিছু গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষক দলের সদস্যরা। রাজ্য প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি ও রেডিওলজি বিভাগের তত্ত্বাবধানে ২০০৫ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এনিয়ে গবেষণা চালানো হয়। সুন্দরবনের খাঁড়ি অঞ্চলের নোনা পানিতে সূঁচালো আকারের দেখতে বিশেষ ধরনের শামুকের নির্যাস ক্যানসারের প্রতিরোধক তৈরিতে কয়েক ধাপ সাফল্য মিলেছে বলে বিজ্ঞানীদের দাবি।
কিভাবে সাফল্য মিলল গবেষণায়? সুন্দরবনের খাঁড়ি অঞ্চলের শামুক যার বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘টেলিস্কোপিয়াম টেলিস্কোপিয়াম’। তিনচার ইঞ্চি লম্বা, সূঁচালো আকারের ওই শামুক নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে গিয়ে দেখা গেছে, সেটির নির্যাসে আট ধরনের প্রোটিন রয়েছে। যা ক্যানসার আক্রান্ত টিউমারে রক্ত জালিকা তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে ক্যানসার আক্রান্ত টিউমারের বৃদ্ধি বন্ধ হচ্ছে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ক্যানসার আক্রান্ত ইঁদুর ও খরগোশের দেহে শামুকের নির্যাসের প্রয়োগ ঘটিয়ে দেখা যায়, ক্যানসারের কোষ বৃদ্ধি বন্ধ হচ্ছে। টিউমারের আকারও কমছে। কিন্তু ক্যানসার আক্রান্ত যে প্রাণীর শরীরে শামুকের নির্যাস প্রয়োগ করা হয়নি, তার টিউমারের আকার ক্রমেই বাড়ছে।
শামুকের নির্যাস প্রয়োগের ফলে প্রাণীগুলির দেহে লিভার, কিডনিতে কোনোও প্রভাব পড়ছে কিনা সেটাও দেখা হয়। কারণ ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর কেমোথেরাপি চললেও তার শরীরে বেশকিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে তেমন কিছু পরিলক্ষিত হয়নি। তবে সুন্দরবনের ওই বিশেষ জাতের শামুকের নির্যাসে থাকা আটটি প্রোটিনের মধ্যে কোনোও একটি না কি একাধিক প্রোটিন ক্যানসারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কাজ করছে, সে ব্যাপারে এখনও সুনির্দিষ্ট করে জানতে পারেননি বাংলার বিজ্ঞানীরা। তা জানতে আরও বড় পরিসরে গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৮
ভিএস/এএটি