ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

ফণীর তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড উড়িষ্যা, নিহত ৬

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৮ ঘণ্টা, মে ৩, ২০১৯
ফণীর তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড উড়িষ্যা, নিহত ৬ সড়কে উপড়ে পড়া গাছ সরাতে ব্যস্ত পুলিশ সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত

কলকাতা: ভারতের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত রাজ্য উড়িষ্যায় আঘাত হেনেছে ‘অতি শক্তিশালী’ ঘূর্ণিঝড় ফণী। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় গাছ উপড়ে গেছে। ভেঙে গেছে মানুষের ঘরবাড়ি, দোকানপাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা। 

পানিতে ভেসে গেছে গ্রামের পর গ্রাম। ফণীতাণ্ডব উড়িষ্যায় এ পর্যন্ত ছয়জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এ সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।  

শুক্রবার (০৩ মে) সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে ১৯৫ কিলোমিটার বেগে রাজ্যের গোপালপুর ও পুরীতে আছড়ে পড়ে ফণী।  

তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, বিকেল ৩টার দিকে উড়িষ্যা উপকূলে আছড়ে পড়বে ফণী। তবে এর আগেই আঘাত হেনেছে প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি।  

উপড়ে পড়েছে গাছপালা।  খবরে বলা হয়েছে, ঝড়ের দাপটে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় গাছ-পালা উপড়ে পড়েছে। বিদ্যৎহীন হয়ে গেছে রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চল। উপকূলবর্তী বহু গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। অনেকের ঘরবাড়িও ভেঙে গেছে।  

ঝড়ে পুরীর সাক্ষীগোপালে গাছ পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আর রাজ্যের কেন্দ্রাপাড়ায় ঝড়ের সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধা মারা যান। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ে আরও চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, ফণীর গতিপথে উড়িষ্যার প্রায় ১০ হাজার গ্রাম এবং ৫২টি শহর পড়বে। এসব অঞ্চেলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।  

এর আগে প্রায় ১১ লাখ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয় রাজ্য সরকার। তাদের প্রয়োজনীয় খাবারসহ দুর্যোগকালীন সেবা দেয়া হচ্ছে।  

উড়িষ্যা পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য ৪ হাজার ৮৫২ সাইক্লোন এবং বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। আপাতত ওই ১১ লাখ মানুষের ঠাঁই এই আশ্রয়গুলোতেই।

এছাড়া ভুবনেশ্বর বিমানবন্দরেও প্লেন ওঠা-নামা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া কলকাতার নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে শনিবার (০৪ মে) সকাল ৮টা পর্যন্ত প্লেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।  

এর আগে বলা হয়েছিল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।  

এদিকে পুরীতে ‘ফণী’ আছড়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের দিঘা, মন্দারমণিসহ উপকূলবর্তী অঞ্চলে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে তুমুল ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। পশ্চিমবঙ্গের শঙ্করপুরে ভেঙে পড়েছে হাইটেনশন বিদ্যুতের খুঁটি।  

সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে কলকাতা, মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগণার বিভিন্ন জায়গাতেও থেমে থেমে বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে।  

উড়িষ্যার রেল বিভাগ জানায়, শনিবার পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন রুটে মোট ১৪৭টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করে দেয়া হয়েছে।  

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, বিশাখাপত্তনম ও চেন্নাইয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৩৪টি দল, ত্রাণ সামগ্রীসহ চারটি উপকূলরক্ষী বাহিনীর জাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিশাখাপত্তনম, চেন্নাই, পারাদ্বীপ, গোপালপুর এবং পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া, ফ্রেজারগঞ্জ এবং কলকাতায় বিপর্যয় মোকাবিলা দল মোতায়েন রয়েছে।  

দেশটির জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার-এর মতে, গত ২০ বছরে ওই অঞ্চলের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সামুদ্রিক ঝড়ে পরিণত হয়েছে ‘ফণী’। এর আগে ১৯৯৯ সালে এই মাত্রায় পৌঁছনো সুপার সাইক্লোনে প্রায় ১০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে; ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল বিপুল পরিমাণ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৩ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৯
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।