কলকাতার সবচেয়ে বড় সবজির পাইকারি বাজার কোলে মার্কেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর টাস্কফোর্সের সদস্য কমল দে জানান, রাজ্যে পেঁয়াজের অবস্থা খুবই উদ্বেগজনক। পশ্চিমবঙ্গে উৎপাদিত পেঁয়াজ প্রায় শেষের পথে।
দিন দশেক আগেও কলকাতার পাইকারি বাজারে ৪০ কেজি পেঁয়াজের বস্তার দাম মান অনুযায়ী ৬শ থেকে ৮শ রুপির মধ্যে ছিল। এখন ওই পেঁয়াজের বস্তার দাম এক লাফে বেড়ে ১২শ থেকে ১৪শ রুপি হয়েছে। সে কারণেই কলকাতায় খুচরো বাজারে বেড়েছে দাম।
পশ্চিমবঙ্গে মাসিক পেঁয়াজের চাহিদা ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টন থাকে। চাহিদার মূল অংশ অর্থাৎ ৭০ শতাংশ আসে মহারাষ্ট্র থেকে। কিছু আসে অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে। এই মুহূর্তে মহারাষ্ট্র থেকে চাহিদার মাত্র ১০ শতাংশ পেঁয়াজ আসছে কলকাতায়। এতে যা ঘাটতি হচ্ছে, তা অন্ধ্রপ্রদেশের পেঁয়াজ মোটেও মেটাতে পারছে না।
অপরদিকে চিন্তা বাড়িয়েছে, মহারাষ্ট্রে নতুন পেঁয়াজ জমি থেকে উঠতে এখনও দেরি রয়েছে। মূলত নভেম্বর মাস নাগাদ নতুন পেঁয়াজ ওঠে মাঠ থেকে। ফলে এখনও মাস তিনেক পেঁয়াজের সমস্যা বা বাড়তি দাম থাকবে কলকাতায়। তবে এটা শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, গোটা দেশেই বাড়বে দাম। বাদ পড়বে না বাংলাদেশও।
এরকম চলতে থাকলে সেপ্টেম্বর থেকে ‘পেঁয়াজ’ আমজনতার পাশাপাশি সরকারকেও কাঁদাতে পারে। এমনই মনে করছে পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ী মহল। অতীতের পেঁয়াজের ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধির জেরে বিধানসভা ভোটে ক্ষমাতসীন দলের ভোট নষ্ট হওয়ার নজির রয়েছে ভারতে।
তবে পশ্চিমবঙ্গে পেঁয়াজ উৎপাদন এখন অনেকটাই বেড়েছে। এবছর সাড়ে চার লাখ টনের বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। রাজ্যে উৎপাদিত পেঁয়াজ ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ বাজারে আসে। থাকে জুলাই মাস পর্যন্ত। ফলে ওই সময়টায় বাজারে রাজ্যের পেঁয়াজের জোগান ভালোই ছিল। এখনও অল্প কিছু পেঁয়াজ চাষিদের ঘরে আছে।
এই সুযোগে ওই চাষিরা বেশি দাম হাঁকাচ্ছেন। রাজ্যে পেঁয়াজ চাষের পরিকাঠামো আগের থেকে ভালো হলেও সংরক্ষণের পরিকাঠামো এখনও উন্নত নয়। সংরক্ষণ উন্নত হলে চাহিদা মেটানো সম্ভব হতো। ভিন রাজ্যের দিকে তাকাতে হতো না। এমনই জানিয়েছেন কোলে মার্কেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমল দে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৯
ভিএস/এএ