ঐতিহাসিক সেই গাড়িটি আজও সচল। আবারও পথে বের হলো বাংলাদেশের জাতীয় কবির গাড়িটি।
রোববার (৫ জানুয়ারি) ৫০টিরও বেশি গাড়ি নিয়ে আয়োজন করা হয়েছিল ‘কলকাতা ভিন্টেজ ক্ল্যাসিক কার র্যালি’। এটি ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন ক্লাব থেকে শুরু হয়ে ধীরে ধীরে দক্ষিণ কলকাতা প্রদক্ষিণ করে। র্যালির উদ্যোক্তা কলকাতার শতবর্ষী প্রাচীন সংগঠন অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া। ১৯০৪ সালের ১৮ আগস্ট জন্ম এই প্রতিষ্ঠানের। আগে নাম ছিল অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল।
র্যালিতে একাধিক গাড়ি ছিল যেগুলোর স্টিয়ারিং বাম দিকে। প্রদর্শন করা হয়েছিল সেই সময়কার কিছু মোটরসাইকেলও। এদিন ‘ভিন্টেজ ক্ল্যাসিকাল কার র্যালি’তে অতীতের সেই ছবিটাই যেন প্রত্যক্ষ করলো পথের দু’প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা হাজারও মানুষ।
উদ্যোক্তারা জানান, গাড়িপ্রেমীদের পাশাপাশি পুরনো কলকাতার ইতিহাস-ঐতিহ্যে আগ্রহীদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় এই কার র্যালি। প্রায় ৫০টি সিরিজের গাড়ি অংশগ্রহণ করেছিল এ র্যালিতে। ক্যাডিল্যাক-১৯৫০, বুইক-১৯৪৯, ফোর্ড-১৯৩২, জাগুয়ার-১৯৩০, শেভ্রলে-১৯৪৭, আামেরিকান কিংসওয়ে-১৯৫০, অ্যাডলার জার্মান কার, মার্সিডিজ-১৯৩০, অস্টিন-১৯৩০সহ আকর্ষণীয় সব মডেলের গাড়ি নেমেছিল কলকাতার পথে।
তবে ভিন্টেজ কার র্যালিতে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে কাজী নজরুল ইসলামের গাড়িটি। যে যতটা পেরেছে ক্যামেরায় বন্দি করেছে গাড়ির ছবি। গাড়িতে তখন বসে অনিরুদ্ধ কাজীর মেয়ে মিষ্টি কাজী ও তার মেয়ে স্নেহা। মিষ্টি বলেন, এমন একটা আয়োজন করার জন্য ধন্যবাদ দেবো উদ্যোক্তাদের। ছবিতে দেখা আর সামনে দেখার মধ্যে অনেক পার্থক্য। দাদু (নজরুল) সবার কাছে এখনো সমান জনপ্রিয়।
উদ্যোক্তা সংগঠনের কর্ণধার প্রবীর রায়ের দায়িত্বে আছে কবির গাড়ি। প্রবীর রায় বলেন, রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও পারিবারিক সম্পর্ক আছে নজরুল পরিবারের সঙ্গে। রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আমার কাছেই আছে গাড়িটি।
এদিন রাস্তার দুই প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা বহু মানুষ একবার ছুঁতে চেয়েছেন প্রিয় কবির গাড়িটি। পথে তখন কাজী সব্যসাচীর দল অগ্নিবীণার সদস্যরা গেয়ে চলেছেন ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাপার...। ’ কলকাতায় সাপ্তাহিক ছুটিরদিনে এমন একটা চলন্ত প্রদর্শনীর সাক্ষী হয়ে রইলেন অনেকে। আর কলকাতার মুকুটেও যুক্ত হলো দারুণ এক পালক।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০২০
ভিএস/একে