উভয় বাংলার অখণ্ড ঐতিহ্য হলেও মসলিনকে নিজেদের পণ্য হিসেবে ‘জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন’ (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতির জন্য চেষ্টা করছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার। এ লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে একটি আবেদন প্রক্রিয়াধীন আছে।
মসলিন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মমতা সরকারের প্রচেষ্টা নিয়ে এমনটাই জানায় রাজ্য সচিবালয় মহাকরণের একটি সূত্র।
রাজ্য সরকারের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ থেকেই মসলিন বস্ত্রের উৎপত্তি ঘটেছে। খণ্ডিত বাংলার এ অংশে গঙ্গার দু’ধারের বিস্তীর্ণ অঞ্চল থেকেই সারা বিশ্বে মসলিন ছড়িয়ে পড়ে।
এরইমধ্যে মসলিনের জিআই স্বীকৃতি নেওয়ার জন্য ওয়েস্ট বেঙ্গল খাদি অ্যান্ড ভিলেজ ইন্ডাস্টি বোর্ডের পক্ষ থেকে আবেদন করে রাখা হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো উৎকৃষ্ট মানের দ্রব্য বা পণ্য যদি কোনো অঞ্চলের নিজস্ব হয়, তবে তা ওই অঞ্চলের জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেতে পারে। সে পণ্যের মধ্যে কৃষিজ ফলনের পাশাপাশি থাকতে পারে খাদ্য ও হস্তশিল্প।
কোনো দ্রব্য বা পণ্যের জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার মূল লক্ষ্য হয় বিদেশের বাজার ধরা। সেই লক্ষ্যেই ভারতের বিভিন্ন রাজ্য তার সীমানার মধ্যে থাকা বিভিন্ন এলাকার বিশেষ বিশেষ পণ্যকে তুলে ধরে জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য লড়াই করে।
এর আগে ২০১৭ সালে রসগোল্লাকে দেওয়া হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের জিআই পণ্যের স্বীকৃতি। এবার নতুন করে মসলিনের জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ার লক্ষে এগোচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ।
বর্তমানে বাঁকুড়া, বীরভূম, হাওড়া, মালদহ, দুই ২৪ পরগনা, নদীয়া, বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, কালিম্পং, মেদিনীপুরের বিভিন্ন স্থানসহ মোট ৬৩টি অঞ্চলে তৈরি হচ্ছে মসলিন বস্ত্র। এতে মোট ৩৯ হাজার ৫৮৩ জন তাঁতি উৎপাদনের সাথে যুক্ত। এই সংখ্যা আরও বাড়াতে চাইছে রাজ্য কৃষি দপ্তর।
এদিকে মসলিনের জন্য পরিচিত বাংলাদেশের চেয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকেই এর বিকাশ ছিলো বিপুল, এমন দাবির পক্ষে বহু নথি জোগাড় করছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। দাবি করা হচ্ছে, অবিভক্ত বাংলায় কাপড়ের যে সমৃদ্ধি ঘটেছিল, তাতে পশ্চিমবঙ্গের অবদানই ছিলো বৃহৎ। তাই জিআই পণ্য হিসেবে মসলিনের স্বীকৃতি পাওয়ার যৌক্তিক দাবিদার পশ্চিমবঙ্গ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২০
ভিএস/এবি