জাতিসংঘের দেওয়া এই তথ্য প্রকাশ করেছে ‘ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’ ও 'অক্সফোর্ড পভার্টি অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ’। তাতে বলা হয়েছে, বিশ্বে ৭৫টির মধ্যে ৬৫টি দেশ ২০১৯ সাল থেকে বহুমাত্রিক দারিদ্র্যসীমা উল্লেখযোগ্য হারে কমাতে সক্ষম হয়েছে।
কাকে বলে বহুমাত্রিক দারিদ্র্য? গরিব মানুষের বিভিন্ন ধরনের অভাব, অভিজ্ঞতা এই বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের অন্তর্গত। যেমন বেহাল স্বাস্থ্যব্যবস্থা, শিক্ষার অভাব, নিম্নমানের জীবনযাত্রা ও পেশা, হিংসার হুমকি এবং পরিবেশগত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাস। এ সবই বহুমাত্রিক দারিদ্র্যসীমার অন্তর্গত।
পাশাপাশি রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বের ৬৫টি দেশের মধ্যে সর্বাধিক হারে গরিবের সংখ্যা কমেছে ভারতে। গত ১০ বছরে প্রায় ২৭৩ মিলিয়ন ভারতীয় দারিদ্র্য থেকে বের হতে সক্ষম হয়েছেন। তুলনামূলক দারিদ্র্যসীমা থেকে বেরিয়ে ভারতের পাশাপাশি অবস্থানে আছে আরমেনিয়া, নিকারাগুয়া ও নর্থ ম্যাসেডনিয়া। এছাড়া ভারতের প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও নেপালও দারিদ্র্যসীমা থেকে কিছুটা সুবিধাজনক জায়গায় এসেছে।
মূলত সরকারের সচেতনভাবে নেওয়া নীতিগত প্রচেষ্টার কারণে ভারতসহ এসব দেশ দেখিয়ে দিয়েছে, কীভাবে দারিদ্র্য কমানো যায়। অবশ্য এ পরিসংখ্যান শুরু হয়েছিল মহামারি করোনা ভাইরাস আসার আগে। করোনা ভাইরাস শুরুর পর পরিস্থিতি কী হবে, তা পরবর্তী রিপোর্টে জানা যাবে। তবে তা চরমভাবে বদলে যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ করেছেন।
অক্সফোর্ড পভার্টি অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভের ডিরেক্টর সাবিনা আলকিরে বলেছেন, করোনা মহামারি এই উন্নয়নের ওপর বিরাট আঘাত হেনেছে। যদিও করোনা শুরুর আগের হিসেব অনুযায়ী এই তথ্য আশার আলো দেখিয়েছিল। তবে মানুষকে দারিদ্র্যসীমার ওপরে তুলে আনার এই পন্থা আমাদের শেখাতে পারে, ভবিষ্যতে কীভাবে দরিদ্র মানুষের জীবনযাত্রা উন্নত করা যায়।
এই তথ্য মূলত সংগ্রহ হয়েছে, প্রতিটি দেশের পুষ্টি এবং স্কুল শিক্ষার উপস্থিতির হার হিসেব করে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের জেরে পরিস্থিতি পালটে গেছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির মতে, এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি জরুরি হলো, দারিদ্র্য সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করা, বিশেষত দারিদ্র্যের সঙ্গে জড়িত যাবতীয় অসহায়তার সমাধান খুঁজতে হবে এসব দেশের সরকারকে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২০
ভিএস/টিএ