ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় স্ত্রীকে ডিভোর্স বিজেপি এমপির!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২০
তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় স্ত্রীকে ডিভোর্স বিজেপি এমপির!

কলকাতা: ফের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতিতে এলো নতুন মোড়। শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) শাসকদলের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর সোমবার (২১ ডিসেম্বর) তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সংসদ সদস্য সৌমিত্র খাঁর স্ত্রী সুজাতা খাঁ।

আর বড় খবর, এর পরপরই ডিভোর্সের আইনি নোটিশ পাঠালেন সৌমিত্র।

বিজেপিতে গুরুত্ব না পেয়েই তার এই দলবদল বলে জানিয়েছেন সুজাতা। পাশাপাশি তিনি জানান, পরিশ্রমী কর্মীদের বিজেপিতে সম্মান নেই। দিনের পর দিন অত্যাচার সহ্য করা যায় না। তাই দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত।

এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা হাতে নিয়ে পার্টি অফিসে বসে সাংবাদিক বৈঠকে সুজাতা বলেন, বিজেপিতে ধান্দাবাজ লোকেরাই গুরুত্ব পাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার লোভে একজন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু রাজ্যে দিদিই মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন। এটা জেনে রাখবেন।

এক্ষেত্রে তার নিশানায় সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী বলেই মনে করা হচ্ছে। নাম না করলেও পচা আলু বলে কটাক্ষও করেছেন তাকে। তৃণমূলে যোগ দিয়েই সুজাতা বলেন, উড়ে এসে জুড়ে বসারাই এখন বিজেপিতে মান-মর্যাদা পাচ্ছেন। সবাইকে মুখ্যমন্ত্রীর টোপ দেওয়া হচ্ছে।  

তার দাবি, বর্তমানে বিজেপিতে ৬ জন মুখ্যমন্ত্রী ও ১৩ জন উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার রয়েছেন।

এরপরই উল্লেখযোগ্যভাবে তিনি বলেছেন, যে দল (বিজেপি) অন্যদল থেকে পচা আলুদের নিয়ে নেতা, মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর লোভ দেখায়, সেই দল বেশি দূর এগোতে পারে না। দুষ্টু গরুরা যত দ্রুত দল ছেড়ে বেরোবে তত তৃণমূল আরও শুদ্ধ হবে।

প্রায় এক বছর হলো সুজাতা-সৌমিত্র এক ছাদের তলায় বসবাস করতেন না। গত লোকসভার আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন সৌমিত্র খাঁ। এরপরই বিষ্ণুপর লোকসভা থেকে সংসদ সদস্য হন।

এদিন সাংবাদিক বৈঠকে সৌমিত্র খাঁ বলেন, রাজনীতি আর ব্যক্তিগত জীবন এক হওয়ার নয়। কিন্তু ১০ বছরের বিবাহিত জীবন রাজনীতির কারণে এভাবে আলাদা হবে তা জানা ছিল না। আমি শুধু সুজাতাকে বলতে চাই তার এ সিদ্ধান্তে আমি বাধা দিচ্ছি না। রাজনীতির ঊর্ধ্বে কিছু ভালোবাসা ও সম্পর্ক থাকে। স্বামী-স্ত্রী বিপদে একসঙ্গে থাকে, একে অপরের পাশে থাকে। সেখানে রাজনীতি চলে আসবে এটা ভাবা যায়নি।

এদিন সাংবাদিক বৈঠকের শুরু থেকেই সৌমিত্র খাঁর গলায় ছিল কান্নার সুর। কথা বলতে বলতে ধরে আসছিল গলা।

বিজেপি এমপি বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়েছিলাম মানুষের স্বার্থে। সেদিন দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুলদা পাশে ছিলেন। সুজাতাও আমার সঙ্গ দিয়েছিল। এটা আমি অস্বীকার করিনি, আজও করছি না।

এরপরই সৌমিত্রের বক্তব্য, আমার দুঃখ লাগছে একটাই যে সুজাতার সঙ্গে আমারও তিন মাস ঝগড়া চলছিল। দুই পরিবার ছিল তখন পাশে। তুমি ছাড়া কোনো নারীর সঙ্গে একদিনও কাটাইনি। হঠাৎ করে এরকম সিদ্ধান্ত নেবে ভাবতে পারেনি।

এদিন তৃণমূল ভবনে সংসদ সদস্য সৌগত রায় ও দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দেন বিজেপি এমপি তথা দলের যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁর স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁ। তৃণমূলের হয়ে এবার ভোটে কতটা কার্যকরী হতে পারেন সুজাতা এখন সেটাই দেখার বিষয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২০
ভিএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।