কলকাতা: ত্যাগের মধ্য দিয়ে গোটা বিশ্বের সঙ্গে কলকাতার মুসলিমরাও উদযাপন করবেন ঈদুল আজহা। পশ্চিমবঙ্গে করোনা গ্রাফ নিম্নমুখী হওয়ায় রাজ্যের আংশিক লকডাউনের কড়া বিধি-নিষেধ কিছুটা শিথিল করেছেন রাজ্য সরকার।
করোনার কারণে এবার সেভাবে পশুর হাটে আসতে পারেনি ভিন রাজ্যের পশু। দু-একজন ছাড়া বাজার দখল করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ, বনগাঁ, দক্ষিণ ২৪পরগনার গরু ব্যবসায়ীরা। মূলত এ সময় ভারতের উত্তরপ্রদেশে, বিহার, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলোর থেকে শহরে আসে গরু, উট, বড়মাপের খাসি এবং দুম্বা।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে ভারতের আন্তঃরাজ্য গণপরিবহন স্বাভাবিক না হওয়ায় কলকাতায় আসতে পারেনি পশু পালনকারীরা। ফলে পশ্চিমবঙ্গের দেশীয় পশু পালনকারীদের বাজার রমরমা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, ওই সব রাজ্যের যেসব ওজনের এবং আকৃতির পশু মেলে তা পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়ায় তৈরি হওয়া সম্ভব নয়। ফলে কলকাতার অস্থায়ী পশুর হাটে কেনাবেচা মোটামুটি। এরপরেও পশ্চিমবঙ্গের নিরিখে আন্তঃজেলার গণপরিবহন এবং লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকায় খুব বেশি পশু আসতে পারেনি কলকাতার শহরে। ফলে দাম অনেকটাই বেশি। এবারে গরু বিক্রি হচ্ছে ১২ হাজার থেকে ৫ লাখ রুপিতে, খাসি ২০ হাজার থেকে ৭০ হাজার রুপি, উট ১ লাখের ওপর এবং দুম্বার দর শুরুই হয়েছে দেড়লাখ রুপি থেকে। যা দুই বছর আগে এর অর্ধেক দামে কিনতেন কলকাতাবাসীরা।
মুর্শিদাবাদের পশু বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, বাজার মোটেও ভালো না। কলকাতার হাট কমিটিগুলো প্রতিদিন ৫০০ রুপি করে নিচ্ছে। এর সঙ্গে পশুদের খাওয়ার খরচ, বাড়তি গাড়ি ভাড়া দিয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতায় আসা, এরপরেও সারা বছর পশু লালন-পালন করতে যে খরচ হয়েছে সব মিলিয়ে এখনো পর্যন্ত সেই টাকায় তুলতে পারিনি, লাভ তো দূরের কথা।
সস্ত্রীক পরিবার নিয়ে কলকাতার পার্কসার্কাস থেকে এক পশু হাটে কিনতে আসা রফিকের কথায় বাজার দর খুবই বেশি। যে গরু ৪০ থেকে ৭০ হাজার রুপির মধ্যে মিলিত সেই গরু এক লাখ চাইছে। যে খাসি আগে ১৫ থেকে কুড়ি থেকে ২০ হাজার টাকায় মিলত সেগুলোর দামই শুরু হয়েছে ২৫ হাজার রুপি থেকে। তবে স্বস্তির বিষয় হলো, প্রশাসন শক্ত হওয়ায় রাজ্যে করোনা টিকাকরণ বেশি এবং কলকাতায় করোনা মৃত নেই বললেই চলে। সে কারণে বিক্ষিপ্তভাবে পশুর হাটগুলো বসার অনুমতি দিয়েছন রাজ্য। এবারে বসবে কিনা তাই নিয়েই প্রথম দিকে দ্বিধায় ছিল রাজ্য সরকার।
পাশাপাশি অতিমামির কারণে এবারেও কলকাতার রাজপথে অনুষ্ঠিত হবে ঈদের জামাত। তবে শহরের মসজিদে সকালে কয়েক ধাপে ঈদের নামাজের অনুষ্ঠিত করা যাবে। এছাড়া দুই বছর আগেই সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়েছে প্রকাশ্যে রাস্তার ওপর কোরবানি দেওয়া যাবে না। এর ফলে গত দুই বছর ধরেই নিয়ম মেনেই কোরবানি হয়ে এসেছে। এবছরও তার ব্যতিক্রম না হয় তার অনুরোধ করছেন রাজ্য সরকার।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২১
ভিএস/এএটি/