কলকাতা: রোববার কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডের ভোট গণনা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩৪টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কাকে মেয়র করেন এখন এটাই দেখার বিষয়। তালিকায় সাবেক মেয়র ফিরাদ হাকিম ছাড়া আরও দুই নারী জয়ী প্রার্থীর নাম আলোচনায় আসছে।
ফলাফলের দিনেই কামরূপ কামাক্ষ্যা মায়ের পূজা দিতে আসামে গিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দলের জয়ী কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন তৃণমূল নেত্রী। দক্ষিণ কলকাতার মহারাষ্ট্র নিবাসে হবে সেই বৈঠক। ওই বৈঠকেই ঠিক হবে মেয়রের নাম। তবে গত দু’দশক ধরেই ক্রমাগত উত্থান দেখা গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের।
তবে বুধবার কলকাতা যা দেখল, তা আগে কখনও হয়নি। কোনো রাজনৈতিক দল মাত্র ৭-৮ মাসের ব্যবধানের মধ্যে ১৫ শতাংশ ভোট বাড়িয়েছে এমন নজির ভারতেও নেই। কিন্তু সেটাই করে দেখিয়েছে মমতার দল তৃণমূল।
অপরদিকে যে বামেরা বিধানসভায় একটিও আসন পায়নি। তারাও পেল দুটি আসন। শুধু আসন নয় ভোটপ্রাপ্তির হারে দ্বিতীয়স্থানে উঠে এল বামেরা। বিধানসভার নিরিখে যে ভোট ৫ শতাংশর নিচে ছিল, কলকাতার সিটি ভোটে প্রায় ১২ শতাংশ বেশি পেল তারা। অবশ্য অনেকের ধারণা বিধানসভা ভোটের মতো বাম-কংগ্রেসের জোট না হওয়ার ফল পেয়েছে বামেরা।
অরপরদিকে সিটি ভোটের তৃতীয় স্থানে নেমে গেল বিজেপি। প্রায় ৯ শতাংশর কম ভোট পেয়ে কাউন্সিলর সংখ্যা তিন। যে বিজেপি একুশের বিধানসভা ভোটে ৭৭টা আসন পেয়েছে, এমকি ২০১৫ সিটি ভোটে ৭টি পেয়েছিল তাদের এরকম দশা হলো কেন?
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মত, তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে বিরোধী শক্তি হিসেবে বামেদের তুলে আনতে চাইছে। কারণ বিধানসভা ভোটের সময় ‘নো ভোট টু বিজেপি’ প্রচার করে তৃণমূলের সুবিধা করে দিয়েছিল বামেরা। সেই প্রতিদানে এবার কয়েকটি আসন বামেদের পাইয়ে দিয়েছে শাসক দল।
পাশাপাশি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবি, যে বুথগুলোয় শাসক দল জাল ভোট দিয়েছে, সেখানে তিনটি ভোট তৃণমূলকে দিলে দুটি দিয়েছে বামেদের। জাল ভোট যে প্রকাশ্যে হয়েছে, তা সকলেই জানেন। তাই এই ফল বিজেপির।
তবে রাজনৈতিক মহলের ধারণা একুশের বিধানসভা ভোটে যে লড়াই ত্রিমুখী ছিল, কয়েক মাসের ব্যবধানে সেই লড়াই চতুর্মুখী হয়ে গেছে। সিটি ভোটে বাম এবং কংগ্রেস জোট বাঁধেনি। পাশাপাশি একুশের বিধানসভা ভোট এবং পরবর্তী উপনির্বাচনে পরাজয়ের জ্বালার ক্ষত এখনও রাজ্য বিজেপি সারিয়ে উঠতে পারেনি। পাশাপাশি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়ার হিড়িক এবং প্রথম থেকেই তাদের কলকাতায় সাংগঠনিক দুর্বলতা আছে। রাজ্যে তাদের রাজনৈতিক শক্তি সবচেয়ে বেশি উত্তরবঙ্গে। ফলে বিজেপির সিটি ভোটে এই হাল।
এদিকে, ৫ শতাংশর কম ভোট পেয়ে দু’জন জয়ী প্রার্থী কংগ্রেসের। রাজ্যে কোনোরকমে টিকে থাকল তাদের অস্তিত্ব।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২১
ভিএস/এমজেএফ