ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

মমতাকে সাহিত্য সম্মান দেওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৮ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২২
মমতাকে সাহিত্য সম্মান দেওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গে

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সোমবার (৯ মে) ছিল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মদিবস। সেখানে কবিগুরু জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর ‘কবিতা বিতান’ কাব্যগ্রন্থের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এবছর প্রথম ‌‘পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমি’র নামাঙ্কিত ‘রিট্রিভার্সিপ পুরস্কার’ অর্থাৎ ‘ত্রিবার্ষিক পুরস্কার’ দেওয়া চালু হয়েছে। আর তাতে প্রথম বছর বাংলার সাহিত্যিকদের পরামর্শে, মমতার ‘কবিতা বিতান’ কাব্যগ্রন্থের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে।  
 
মঞ্চে দাঁড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী তথা বাংলা একাডেমির চেয়ারম্যান (সভাপতি) ব্রাত্য বসু  সোমবার বলেছিলেন, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা অবদানের পাশাপাশি যারা নিরলস সাহিত্য সাধনা করছেন, তাদের এবার থেকে পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলা একডেমি। প্রথম বছর পশ্চিম বাংলার শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিকের মতামত নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার ‘কবিতা বিতান’ কীর্তির জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, শ্রীজাত, জয় গোস্বামী আবুল বাশার এবং সুবোধ সরকারের মত সাহিত্য ব্যক্তিত্বরা।

তবে এই বিশেষ সম্মানে কবি হিসেবে মমতাকে ভূষিত করার জন্য নেটদু নিয়ায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিরোধীদল তো বটেই, এমনকী সাধারণদের মধ্যে সমালোচনায় শুরু হয়েছে। অনেকের মতে, মমতা একজন দক্ষ রাজনীতিবিদ। একজন লড়াকু নেত্রী। শখে কবিতা লেখেন। কবি হিসেবে মমতার এই পুরস্কার  প্রাপ্য? এতে বাংলার যারা সত্যিকারের কবি তাদের অপমান করা হয়েছে।

আরও একধাপ এগিয়ে তারই প্রতিবাদে ২০১৯ সালে পাওয়া ‌‘অন্নদাশঙ্কর’ সম্মান ফেরালেন পূর্ব বর্ধমানের খাগড়াগড়ের বাসিন্দা লেখিকা ও গবেষক রত্না রশিদ বন্দোপাধ্যায়।  

মঙ্গলবার (১০ মে) বাংলা একাডেমিকে চিঠি পাঠিয়ে লেখিকা তার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। লেখিকার এই সিদ্ধান্তে কবি ও সাহিত্যিক মহলে শোরগোল ফেলে দিয়েছে।

এর প্রতিবাদে ফেসবুকে ‘হাম্বা হাম্বা’এবং ‘এপাং ওপাং ঝপাং’ কবিতা দুটি পাঠ করেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। যে দুটি কবিতা মমতার লেখা। সামাজিকমাধ্যমে অভিনেত্রীকে বলতে শোনা যায়, কে বলে বাঙালি শুধু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতাই পড়ে? বাংলা একাডেমির পুরস্কার পেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার নিরলস সাহিত্যচর্চা ও কবিতা সাধনের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে তাকে। আমি তার উদ্দ্যেশে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে তারই লেখা দুটি কবিতা পাঠ করতে চাই। এরপরই মমতার লেখা কবিতা পাঠ করেন শ্রীলেখা মিত্র।

সাংবাদিক সফিকুল ইসলাম বলেন, তার যা কবিতা তা সবাই জানেন। এখানে অন্য কোনও বিষয় কাজ করছে। সন্তুষ্টির বিষয় কাজ করছে। তবে ‘অন্নদাশঙ্কর’ সম্মান ফিরিয়ে দেওয়া লেখিকা ও গবেষক রত্না রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিষয়ে কবি সুবোধ সরকার বলেছেন, এটা ওনার ব্যক্তিগত বিষয়।

মঙ্গলবার তিনি বলেছেন, সামাজিকভাবে যাদের বড় ভূমিকা রয়েছে এবং একইসঙ্গে যারা সাহিত্য রচনা করছেন তাদের এই পুরস্কার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। একটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর প্রতিবাদে কেউ পুরস্কার ফেরত দিলে আমরা কী করতে পারি। সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৮ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২২
ভিএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।