কলকাতা: শরৎকালের আশ্বিন মাস মানেই দেবী দুর্গার আরাধনা। পশ্চিমবঙ্গের বাঙালির প্রধান উৎসব দুর্গাপূজা।
তার মধ্যে প্রাপ্তি, এবার করোনার চোখ রাঙানি নেই, নেই কোনও কোভিড নির্দেশিকা। তার ওপর বড় সাফল্য কলকাতার দুর্গাপূজা ইউনেস্কো স্বীকৃতি পাওয়া। তাই সবকিছু এবার একটু আগেভাগে হচ্ছে। চলতি মাসটায় এমনিতেই প্রায় মাসজুড়ে উৎসব। ১-৫ অক্টোবর দুর্গোৎসবে মাতবে কলকাতা। ১০ তারিখ লক্ষ্মীপূজা। এ রকমই চলতে থাকবে মাসজুড়ে। শেষ হবে কালীপূজা, ভাঁইফোটার মধ্য দিয়ে। ফলে কলকাতার বাঙালির এ সময়টা একটু গা এলানো মনোভাব থাকে।
সেই হিসেব অনুযায়ী ছয়দিন বাদেই দুর্গাপূজা। কলকাতাজুড়ে তাই বারোয়ারি ও বনেদি বাড়ির পূজায় চলছে শেষ মুহূর্তের তুলির টান, শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা, শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। সেই ‘ফিনিশিং টাচ’য়ে রোববার (২৫ সেপ্টম্বর) সামিল ছিলেন মন্ত্রী থেকে সাধারণরা। কোথাও চলছে চক্ষুদান, কোথাও থিম সং লঞ্চ, কোথাও উদ্বোধন। মহালয়ার দিনেই ‘ফেস্টিভ মুডে’ গোটা কলকাতা শহর।
এদিন যেমন সল্টলেক ‘শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব’-এ প্রতিমাকে সাজানো হল স্বর্ণের গহনা দিয়ে। যার বাজার মূল্য কয়েক কোটি রুপি। এবারে এ পূজা ৫০ বছরে পড়ল। এদিনই মণ্ডপে নিয়ে আসা হল স্বর্ণের মুকুট ও অন্যান্য গহনা। ভ্যাটিকান সিটির আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। সবার জন্য মণ্ডপ এখনই খুলে না গেলেও লোকজন ভিড় জমাতে শুরু করেছেন।
এদিনও বেশ কিছু পূজার উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরাদ হাকিমের পূজা বলে পরিচিত ‘চেতলা অগ্রণী ক্লাব’, বিগত বছরগুলোর মতো দুর্গা প্রতিমার চোখ আঁকলেন মমতা। অপর একটি পূজা সবার নজর কাড়ছে। উত্তর কলকাতার আহিরীটোলা যুবকরা। কয়েকজন দৃষ্টিহীন নারী এ মণ্ডপে দেবীর চোখ আঁকার কাজটি করলেন। উপস্থিত ছিলেন নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। প্রথা অনুযায়ী, মহালয়ার দিন দেবী প্রতিমায় চোখ অঙ্কন হল, উত্তর কলকাতার ২৬৬ বছরের শোভাবাজার রাজবাড়ির পূজার। যাকে বলা হয় চক্ষুদান পর্ব।
শহরে সাবেকিয়ানার সঙ্গে আধুনিকতা, থিমের সঙ্গে থিমবিহীন প্রথা সিদ্ধতার টক্করে সদা উজ্জ্বল কলকাতার বাঙালির এ শারদোৎসব। আর সেই পরিপ্রেক্ষিতে রোববার মহালয়ার দিন উৎসব উদযাপনের রং যেন ক্রমশ উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়েছে। পাশাপাশি পূজার আগে এদিন ছিল সপ্তাহের শেষ ছুটির দিন। কোনাকাটার ব্যস্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২
ভিএস/আরবি