কলকাতা: চিকিৎসাশাস্ত্রে কলকাতায় মিরাকেল ঘটালো নীলরতন সরকার (এনআরএস) হাসপাতাল। দেড় ফুটের ত্রিশূল গলায় ঢুকে এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যায় এক যুবকের।
অভিযোগ, রোববার রাত ১১টা নাগাদ ভাস্করের ঘরে ঢুকে তার ওপর হামলা করে প্রতিবেশী দুই যুবক। ভাঙচুর করা হয় ঘরের আসবাবপত্র। এরপরই ঘরের কোণে থাকা পৈতৃক ত্রিশূল তুলে সোজা গেঁথে দেয় ভাস্করের গলায়। দেড়ফুটের ত্রিশূল গলায় বিঁধে ভাস্করের তখন মরমর অবস্থা। কোনোমতে ঘর থেকে বেরিয়ে প্রতিবেশীর কাছে সাহায্য চান ভাস্কর।
ওই অবস্থায় ভাস্করকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে। চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসার পরই ভাস্করকে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানান। স্থানীয় সময় তখন প্রায় রাত ৩টা। ভাস্করকে নিয়ে যাওয়া হয় এনআরএস হাসপাতালে। ওই অবস্থায় তাকে দেখে চিকিৎসকেরাও হতবাক। জরুরি অপারেশনের মাধ্যমে ত্রিশূল বের করতে দেরি করেননি হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
ট্র্যাকিওস্টমির পদ্ধতিতে তার শ্বাসনালীর দিকটা ঠিকঠাক রেখে, পুরোপুরি অজ্ঞান করে ত্রিশূলটিকে অত্যন্ত ঝুঁকির সঙ্গে বের করেন হাসপাতালের ইএনটি এবং অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের চিকিৎসকরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচারের পর বের করা হয় ত্রিশূল। নতুন প্রাণ ফিরে পায় নদীয়ার যুবক। চিকিৎসকদের মতে, একটু এদিক-ওদিক হলেই মারাত্মক বিপদ ঘটতে পারত ভাস্করের। মিরাকেল এই অস্ত্রোপচারের পর সাফল্যে বিরাট খুশি এনআরএস হাসপাতালের ইএনটি বিভাগীয় প্রধান সুমন্ত দত্ত।
ভাস্করের ওপর হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে দুইজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে ঠিক কী কারণে এই হামলা, তা জানা যায়নি।
তবে এদিনের এই বিরল অস্ত্রোপচার প্রসঙ্গে হাসপাতালের প্রিন্সিপ্যাল অধ্যাপক পীত বরণ চক্রবর্তী বলেন, ভাস্করকে দেখে প্রথমেই চিকিৎসকরা হতবাক হয়ে যান। তবে রীতিমত অস্ত্রোপচারকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেন ইএনটি এবং অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের চিকিৎসকরা। প্রায় দেড় ঘণ্টার সফল অস্ত্রোপচারের পর দেড় ফুটের ত্রিশূলটিকে বের করে আনেন চিকিৎসকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, ২৮ নভেম্বর ২০২২
ভিএস/আরএইচ