ঢাকা: ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা অপরিহার্য উল্লেখ করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য আইপিভি ৬ বাস্তবায়নে সরকার বদ্ধপরিকর। মঙ্গলবার (৯ মে) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আইএসপিএপি ও বিডিনগ আয়োজিত সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অপারেটরস গ্রুপের সম্মেলন-স্যানোগ ৩৯ ও বিডিনগ এর ১৬তম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা অপরিহার্য। এ বিষয়েও আমরা অত্যন্ত মনোযোগী। এ জন্য একই সঙ্গে আইপিভি ৪ ও আইপিভি ৬ অ্যানাবল রাউটার আমদানিতে বাধ্যাবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য আইপিভি ৬ বাস্তবায়নে সরকার বদ্ধপরিকর।
মন্ত্রী জানান, দেশব্যাপী ইন্টারনেট ছড়িয়ে দিতে বাংলাদেশ অভাবনীয় সফলতা অর্জন করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় গত ১৪ বছরে আমরা শুধু ডিজিটাল সংযুক্তির মহাসড়কই তৈরি করিনি, ইন্টারনেটের প্রতি এমবিপিএসের মূল্য ২৭ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৬০ টাকায় নামিয়ে এনেছি। এক দেশ এক রেট নির্ধারণের মাধ্যমে ডিজিটাল বৈষম্য দূর করা হয়েছে। ইন্টারনেট এখন মানুষের শ্বাস প্রশ্বাসের মতো। ২০০৮ সালে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহার হতো সাড়ে সাত জিবিপিএস, তা বর্তমানে ৪১শ জিবিপিএসে উন্নীত হয়েছে। সে সময়ের ৮ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর স্থলে এখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাড়ে ১২ কোটি।
অনুষ্ঠানে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব-উল-আলম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুর রহিম খান, এপনিকের মহাপরিচালক পল উইলসন, সেনগ চেয়াম্যান রুপেস শ্রেষ্ঠ, বিডিনগ প্রেসিডেন্ট রাশেদ আমিন এবং আইএসপিএবি সভাপতি মো. এমদাদুল হক বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিজিটাল এইজ ডিসির হেড অব ইন্টারকানেক্ট ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন রাফেল হো।
ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত বলেন, আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তির মহাসড়ক নির্মাণে এগিয়ে থাকার পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা, ডাটা নিরাপত্তা; ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদুর প্রসারী ভিশন ও গতিশীল নেতৃত্বের কারণে প্রথাগত সেবা ডিজিটাল সেবায় রূপান্তর হচ্ছে। এবারের ঈদে ট্রেনের টিকিট শতভাগ অনলাইনে বিক্রি হয়েছে। ভূমি ব্যবস্থার পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল রূপান্তর হয়েছে। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমেই এসব রূপান্তর সম্ভব হচ্ছে। ইন্টারনেট হয়ে উঠেছে জীবনের রসদ।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রযুক্তিতে ৩২৪ বছর পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ বিশ্বে আজ অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দেশের প্রতিটি মানুষের দোড়গোড়ায় দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে সরকার কাজ করছে। ইতোমধ্যে দেশের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে এমন কোনো ইউনিয়ন থাকবে না যেখানে দ্রুততগতির ইন্টারনেট সুবিধা থাকবে না। আমরা দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ অঞ্চলে মোবাইল ফোনের জন্য ফোরজি নেটওয়ার্ক পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি। ২০২১ সালে আমরা ৫জি প্রযুক্তি চালু করেছি।
সম্মেলনে বাংলাদেশের চার জনসহ ১১ জন নেটওয়ার্ক প্রকৌশলীকে ফেলোশিপ দেওয়া হয়। সম্মেলনের অংশ হিসেবে আগামী চার দিন হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে চলবে নেটওয়ার্ক প্রকৌশলীদের কর্মশালা। দক্ষিণ এশিয়ার ৬টি দেশের ৩০০ প্রকৌশলী অংশ নিচ্ছে এতে।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে কারিগরি সেশনে হারিকেন ইলেকট্রিকের অনুরাগ ভাটিয়া ওপেন সোর্স সেলফ হোস্টেড ভিপিএন দিয়ে আইপিভি ৬ ডেপ্লয়মেন্টের কৌশল উপস্থাপন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, মে ৯, ২০২৩
এমআইএইচ/এমএমজেড