ঢাকা, বুধবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

ল্যাপটপ প্রদর্শনীতে শিক্ষাবৃত্তি

আইসিটি রিপোর্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৩ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০১২
ল্যাপটপ প্রদর্শনীতে শিক্ষাবৃত্তি

এবারের ১১তম ল্যাপটপ প্রদর্শনীতে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে আয়োজক মেকার কমিউনিকেশন। দেশের ১১ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকার শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়েছে।



এসব শিক্ষার্থীদের কাছে বৃত্তি তুলে দিতে উপস্থিত ছিলেন দেশের প্রথম এভারেস্ট জয়ী মুসা ইব্রাহিম, দেশসেরা গলফার সিদ্দিকুর, তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মুনির হাসান এবং বেসিস জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ফাহিম মাশরুর।

শিক্ষাবৃত্তি প্রসঙ্গে সমন্বয়ক বিপ্লব ঘোষ রাহুল জানান, তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব বাড়ছে। এবার ১১ জন গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীকে মেকার কমিউনিকেশন শিক্ষাবৃত্তি দিয়েছে। আগামী বছর থেকেও এ ধারা অব্যাহত রাখা হবে।

এরই মধ্যে সামার ল্যাপটপ প্রদর্শনী ২০১২ পর্বে ১১ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়েছে। এ তালিকায় তাদের প্রোফাইল যুক্ত করা হলো।

স্বপন চন্দ্র দাস
সূর্য উঠার আগেই বাবার সঙ্গে মাছ ধরতে নদীতে যেত স্বপন চন্দ্র দাস। আর এ মাছ বিক্রির টাকা দিয়ে সংসার চলত তাদের। নিজের বই ছিলো না। বন্ধুদের বই ধার করে পড়ত স্বপন। শত অভাব অনটনের মধ্যেও হার মানে নি সে। রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার আদর্শ বিদ্যালয় এবারে স্বপন জিপিএ-৫ পেয়েছে।

পিতোষ কুমার দাস
সংসারের হাল ধরতে বাবার সঙ্গে মাছ ধরত পিতোষ কুমার দাস। ছিলো না পড়ার টেবিল, অন্যের সাহায্য পড়ালেখার খরচ চলত। তবুও দমে যায়নি পিতোষ। অদম্য চেষ্টায়, সাফল্য অর্জন করেছে পিতোষ। পেয়েছে জিপিএ-৫।

বিপুল মিয়া
বাবা মায়ের সীমিত আয়ে সংসার চলে না বিপুল মিয়ার। তাই সকাল-বিকাল টিওশনি করাতে হত তাকে। তবুও অভাব পিছু ছাড়ে না। শত বাধা আর অভাবকে জয় করে এ বছর গাজীপুরের শ্রীপুরের তেপড়ীপাড়া থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে বিপুল।




সৈয়দ নাজমুল হক
গরীব ঘরের সন্তান সৈয়দ নাজমুল হক। মা ক্যান্সারে আক্রান্ত। অভাব দূর করার জন্য টিউশনি করে, লেখাপড়ার পড়ার খরচ আর অসুস্থ মায়ের ওষুধ কিনত সে। প্রিয় মাও এ পৃথিবী ছেড়ে চলে যান গণিত পরীক্ষার দিন। কিন্তু ভেঙ্গে পড়েন নি নাজমুল। শোককে শক্তি করে জিপিএ-৫ অর্জন করে নাজমুল।

আইভি আক্তার
অভাব অনটন নিত্য সঙ্গী আইভী আক্তারের পরিবারের। দরিদ্র পিতার আয়ে সংসার চলে না। তাই নানীর সঙ্গে থাকে সে। বাসার আশে-পাশের ছোট ছেলে-মেয়েদের পড়িয়ে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালায় আইভি। শত অভাব অনটনের মধ্যেও হার মানেনি আইভি। এবারে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে।

শহিদুল ইসলাম
বাবা নেই শহিদুল ইসলামের। মা অন্যের বাসায় কাজ করে সংসার চালায়। অভাব অনটনের মধ্যে নিজ লক্ষ্যে অবিচল ছিলো শহিদুল। তবুত বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে এবার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন পেয়েছে শহিদুল।

সোহানা আক্তার
দরিদ্র পরিবারের মেয়ে সোহানা আক্তার সংসারের অভাব দূর করার জন্য বাবার সঙ্গে বিড়ি কারখানায় কাজ করে। একদিকে কাজ তো অন্যদিকে লেখাপড়া এ দুই নিয়েই তার জীবন। শত পরিশ্রমের মধ্যেও সে অর্জন করে তার সাফল্য অর্জন করে। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করে সোহানা।

ফাতেমা আক্তার নিশা
দরিদ্র রিক্সাচালক বাবার আয়ে সংসারের নিত্যঅভাব ফাতেমা আক্তার নিশার পরিবারের। তবুও হার মানেনি নিশা। নিজ লক্ষ্যে অবিচল ফাতেমা আক্তার নিশাও পেয়েছে জিপিএস-৫।

সবুরুন নেসা বিনা
অভাব অনটনে নিত্য বসবাস সবুরুন নেসা বিনার। বাবার চাকরি নেই দুবছর। অভাব, কষ্ট আর দারিদ্রের মধ্যে আলো ছড়িয়েছে সবুরুন নেসা বিনা। খেয়ে না খেয়ে, শত দুঃখ কষ্টের মধ্যেও এবারের এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে বিনা।

সাম্প্রতী জেরীন সম্পা
কৃষক বাবার আয়ে টানাটানি করে সংসার চলে জেরীন সম্পাদের। তবুওজিপিএস-৫ অর্জন করে নিয়েছে জেরীন।  

লাল্টু মিয়া
সকালে পড়ার টেবিলে বই হাতে নেওয়ার সুযোগ হয়নি। পেটের দায়ে কাস্তে হাতে যেতে হয়েছে পরের ক্ষেতে। সারাদিন হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পর লেখাপড়া করত লাল্টু মিয়া। এসএসসির রেজাল্টের সময় কাজ করছিল সে। আর তখনই পৌঁছালো জিপিএ-৫ পাওয়ার বার্তা।

বাংলাদেশ সময় ১৬৫৩ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০১২
সম্পাদনা: সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।