বাংলাদেশ আউটসোর্সিংয়ে দারুণ এগিয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ ৩০টি দেশের তালিকায় এখন বাংলাদেশের অবস্থান।
কিছুদিন আগে ওডেস্কের শীর্ষ কর্মকর্তা বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। জানিয়েছেন এ খাতে বাংলাদেশের সমস্যা আর সম্ভাবনার কথা। কিন্তু দেশের কয়েকটি অসাধু চক্র এ খাতটিকে বিনষ্ট করতে নানা ধরনের প্রলোভনের ফাঁদ পেতেছেন।
ক্লিক করলেই ডলার। মাসে ঘরে বসে হাজার হাজার টাকা আয়ের জন্য প্রশিক্ষণ। এসব চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সহজ এবং বিনা ব্যয়ের একটি আন্তর্জাতিক আয়ের মাধ্যমে সাধারণ এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে বিতর্কিত করে তুলছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের আইসিটি খাতের শীর্ষ সংগঠন বেসিস ‘আউটসোর্সিং নিয়ে প্রতারণা’ শীর্ষক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে। এখানে বাংলাদেশে জন্য আউটসোর্সিং একটি অমিত সম্ভাবনা বলে উল্লেখ করেন বেসিস সভাপতি মাহবুব জামান।
এ সম্মেলনে আউটসোর্সিং প্রতারণায় ভুক্তভোগী ইমরান আহমেদ, জাবির শিক্ষার্থী আবদুল আলিম এবং আরিফ হোসেনের অভিজ্ঞতাকে কেস স্ট্যাডি হিসেবে তুলে ধরা হয়।
এদিকে আউটসোর্সিংয়ে সফল ঢাবির ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী জাফরিন রেজওয়ান এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত শাহরিয়ারের অভিজ্ঞতাকে সবার সামনে উপস্থাপন করা হয়। এ মুহূর্তে ওডেস্কের মার্কেট হিসাবে বাংলাদেশ ১২ ভাগ কাজ করছে। বিশ্বের আউটসোর্সিং বাজার হিসাবে বাংলাদেশে এখন তাই সম্ভাবনার পথেই এগোচ্ছে।
আগামী ৩০ জুন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেসিস উদ্যোগে একটি সচেতনামূলক প্রচারণা শুরু করবে। আউটসোর্সিং খাতকে আরও দিকনির্দেশনামূলক এবং নীতিমালার অধীনে পরিচালিত করতে বেশ কিছু উদ্যোগের কথা জানায় বেসিস।
এতটা দেরিতে বেসিস এ বিষয়ে কেন উদ্যোগ নিলÑএমন প্রশ্নের জবাবে বেসিস সহ-সভাপতি ফাহিম মাশরুর জানান, আউটসোর্সিং নিয়ে প্রতারণা এতটা নেতিবাচক পথে এগিয়েছে তা অনুমান করা যায়নি।
ফাহিম মাশরুর জানান, আউটসোর্সিংয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধনের জন্য কোনো ফি দিতে হয় না। এমনকি পরবর্তী পর্যায়েও এর জন্য কোনো ফি ধার্য হয় না। আর ডান-বাম হাতে অর্থাৎ মাল্টি লেবেল মার্কেটিংয়ের মতো (এমএলএম) কোনো পদ্ধতি এখানে গ্রহণযোগ্য নয়।
এ ছাড়াও বিভিন্ন গণমাধ্যম, মাসিক কম্পিউটার পত্রিকা এবং সড়ক পথে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে আউটসোর্সিং প্রতারণার দারুণ সব ফাঁদ তৈরি করা হয়েছে। এতে প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থী, বেকার যুবক এমনকি গৃহিণীরাও।
এ সম্মেলনে বেসিস সভাপতি মাহবুব জামান বাংলানিউজকে বলেন, এটা সত্য এ উদ্যোগ নিতে বেসিসের দেরি হয়েছে। তবে সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে এ খাতে এগিয়ে গেলে আউটসোর্সিং বাংলাদেশের রাজস্ব খাতে দারুণ ভূমিকা রাখতে। শুধু বৈদেশিক মুদ্রা নয়, এর মাধ্যমে হাজার হাজার কর্মসংস্থানেরও সুযোগ তৈরি হবে। কাজেই এ খাতের অশুভ প্রচেষ্টাকে সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করতে হবে।
এটি একটি স্বাধীন এবং আন্তর্জাতিক জব মার্কেট। এখানে ফি ছাড়াই নিবন্ধন হওয়া যায়। আর এ কাজের প্রাপ্ত অর্থ উত্তোলনের জন্যও কোনো বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হয় না। এ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরিকে একটি সামাজিক আন্দোলন হিসেবেই গুরুত্ব দিতে হবে।
বাংলাদেশ সময় ১৫১৯ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১২