মোবাইল ফোনের সিম ক্লোনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। +৯২, #৯০ এবং #০৯ এ তিনটি প্রাইমারি কোডের কোনো কল ধরার সঙ্গে সঙ্গে আপনার মোবাইল সিমের সব ধরনের তথ্য কপি হয়ে যাচ্ছে।
এ নতুন ধরনের আতঙ্ক নিয়ে মোবাইল অপারেটররা পড়েছেন দারুণ বিপাকে। এ ধরনের ফোন কোড থেকে কল আসা মানেই কলার কল রিসিভারের তথ্য ক্লোন করতে চাইছে। অর্থাৎ বুঝতে হবে কলার আপনার সেলফোনের তথ্য কপি করছে।
এ ধরনের তথ্য অন্যের হাতে চলে গেলে অনেক ক্ষেত্রেই বড় ধরনের আর্থিক বিপর্যয়ের সুযোগ থাকে। আর সামাজিক মর্যাদা বা ব্লাকমেইলিংয়ের খপ্পড়ে পড়ার বিষয় তো থাকছেই। কারণ সেলফোনে আজকাল অনেক ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি বা কোড সংরক্ষণে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি।
এদিকে সেলফোনে কল করার মাধ্যমে অন্যের অন্য সেল থেকে তথ্য ছিনতাইয়ের এ কৌশলটি দারুণ ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞেরা। এরই মধ্যে ভারতের লক্ষাধিক মোবাইল গ্রাহক এ সিম ক্নোন সমস্যায় পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অনেকে সিমের তথ্য ব্যাংকে এটিএম, ভিসা বা মাস্টার কাডের্র গোপন পিন নম্বর, ব্যাংক আকাউন্ট নম্বর ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ করেন। ফলে এসব তথ্য অন্যের হাতে চলে যাওয়া মানে ব্যক্তি, সামাজিক এমনকি প্রতিষ্ঠানিক বা করপোরেট জগতে বড় ধরনের বিপর্যয় হতে পারে। তাই শঙ্কা ছাড়িয়ে বিষয়টি ক্রমশ আতঙ্কে রূপ নিচ্ছে।
ঠিক কি কারণে এবং কিভাবে এ ভয়াবহ কৌশলটি অপারেশন করছে তা ধরতে পারলে এ ধরনের ডাটা হ্যাকিং নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। নিরাপত্তা সংস্থাগুলোও এ বিষয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান চালাচ্ছে। আপাতত এ ধরনের অপরিচিত কোডের কল না ধরার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষজ্ঞেরা। শুধু কল ধরা নয়, এ ধরনের নম্বর থেকে মিস কল আসলেও কল ব্যাক করা থেকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।
এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান না পাওয়া পর্যন্ত সেলফোন গ্রাহকদের অপরিচিত কল রিসিভ ও মিসড কলব্যাক না করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কল এলে নম্বরটি ভাল করে দেখে নিন, তা +৯২, #৯০, #০৯ নম্বর দিয়ে শুরু কি না!
এ সিম ক্লোন প্রসঙ্গে ভারতের লখনৌর আইটি বিশেষজ্ঞ পুনিত মিসরা জানান, শুধু তথ্য নয়, সিমের মধ্যে সংরক্ষিত সব ধরনের তথ্য যেমন ছবি, ভিডিও ক্লিপস, এমএমএস নিমিষেই কপি করে ফেলছে এ ইউনিক কোড।
এদিকে আরেক নেটওয়ার্ক বিশেষজ্ঞ রাকশিত ট্যান্ডন জানান, এ ধরনের অপরিচিত এবং সাংকেতিক ফোন কল থেকে বিরত থাকাই সুরক্ষার অন্যতম কৌশল। অচিরেই এটি নিয়ন্ত্রণে কারিগরি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আর মোবাইল গ্রাহকদের এসব অানকোড নম্বর থেকে ফোন কল ধরতে নিষেধ করা হচ্ছে। কেননা এরই মধ্যে আক্রমণকারীরা নতুন কিছু কোড দিয়ে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে পারে। কাজেই এ বিষয়ে সচেতনতাই মূল প্রতিরোধ হিসেবে কাজ করছে।
বাংলাদেশ সময় ১৬৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০১২
সম্পাদনা: আহ্সান কবীর, আউটপুট এডিটর